মার্কিন মুলুক বা ইউরোপে বিক্ষিপ্ত সফর আগেই করেছে সে। বাংলার লিচু এ বার পাড়ি জমাতে চলেছে আরব দুনিয়ায়। আট ঘাট বেঁধেই।
এই গ্রীষ্মে আনুষ্ঠানিক ভাবে লিচুর আরব-সফরের সূচনা হচ্ছে। গরম কালের রসালো ফল হিসেবে আমের সঙ্গে এক পঙ্ক্তিতে লিচুর নাম উচ্চারিত হলেও বিদেশযাত্রার দৌড়ে আমের তুলনায় লিচু অনেক পিছিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন সংস্থা কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রফতানি উন্নয়ন পর্ষদ (অ্যাপিডা)-এর উদ্যোগে এত দিনে পশ্চিমবঙ্গের লিচুও সংগঠিত ভাবে বিদেশের বাজার ধরতে বেরোচ্ছে।
মে-র গোড়া থেকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহরাইন, কাতার, ওমানের মতো দেশের ঝাঁ-চকচকে বাজারে ‘শো-কেস’ করা হবে বাংলার লিচুকে। অ্যাপিডা সূত্রের খবর, ওই সব দেশের আমদানিকারক সংস্থাগুলির প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সফর করে গিয়েছেন। তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের লিচু আমদানি করবেন বলে কথা দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রচুর পরিমাণে লিচু উৎপন্ন হয়। তবে বেশির ভাগই অসংগঠিত ভাবে। কাজেই লিচু ফলনের এলাকা কতটা, কত লিচু রাজ্যে বছরে উৎপন্ন হয়, তার হিসেব সরকারের কাছে নেই।
আরও পড়ুন:নতুন আইনকে দুষলেন ডাক্তাররা
এ দেশে বিহারের মুজফ্ফরপুরের লিচুকে সর্বোৎকৃষ্ট বলে গণ্য করা হয়। এবং রফতানির জন্য বেছে নেওয়া হয় শ্রেষ্ঠ জিনিসকেই। আমের ক্ষেত্রে যেমন রফতানিতে গুরুত্ব পায় আলফানসো। সে-ক্ষেত্রে বিহারের লিচু না-গিয়ে বাংলার লিচু পশ্চিম এশিয়া সফরের সুযোগ পাচ্ছে কেন? অ্যাপিডা-র কর্তারা জানাচ্ছেন, ভাগলপুরের ল্যাংড়া আম বাজারে আসে বেনারসি ল্যাংড়ার আগে। একই ভাবে মরসুমে সকলের আগে মেলে (মে মাসের প্রথম সপ্তাহে) পশ্চিমবঙ্গের লিচু। তার অনেকটা পরে বাজারে আসে বিহারের লিচু। তাই পশ্চিমবঙ্গের লিচুকেই প্রথম পাঠানো হচ্ছে আরব দুনিয়ায়। এর আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের লিচু পাঠানো হয়েছিল ইউরোপ, আমেরিকায়। তবে সেই সব উদ্যোগকে আনুষ্ঠানিক রফতানি বলা যাবে না। তা ছাড়া লিচু বড়জোর দু’সপ্তাহ রাখা যায়। তাই ভারত থেকে খুব দূরের দেশে ওই ফল রফতানি করার ঝুঁকি প্রথমেই নেওয়া হচ্ছে না। সে-দিক থেকে পশ্চিম এশিয়া তুলনামূলক ভাবে ভারতের অনেক কাছাকাছি। তাই লিচু যাচ্ছে সেখানে। মালদহ থেকে লিচু রফতানির প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও গড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা অ্যাপিডা। ‘‘পরিমাণে কম হলেও পশ্চিমবঙ্গের লিচুর রফতানি এ বছরেই শুরু হয়ে যাবে। আরব দুনিয়ায়, বিশেষ করে দুবাইয়ের মতো শহরে ভারতের লিচুকে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা হবে,’’ বলেন অ্যাপিডার পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা রণজিৎকুমার মণ্ডল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy