পূর্ব বর্ধমানের চার পুরসভায় বড় রদবদল। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে কাটোয়া, কালনা দাঁইহাট এবং গুসকরা— এই চার পুরসভায় পুরপ্রধান-উপপুরপ্রধান পদে রদবদলের সিদ্ধান্ত নিল শাসকদল তৃণমূল।
কাটোয়া পুরসভার পুরপ্রধান সমীরকুমার সাহাকে সরিয়ে নতুন পুরপ্রধান করা হয়েছে কমলাকান্ত চক্রবর্তীকে। উপপুরপ্রধান লখিন্দর মণ্ডলকেও সরানো হল। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পাবেন ইউসুফা খাতুন। কালনা পুরসভার পুরপ্রধান আনন্দ দত্তকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হল রিনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
গুসকরা পুরসভার উপপুরপ্রধান বেলি বেগমকে সরিয়ে সাধনা কোনারকে নতুন উপপুরপ্রধান করা হয়েছে। তবে পুরপ্রধান পদে কুশল মুখোপাধ্যায় বহাল রয়েছেন। দাঁইহাট পুরসভায় পুরপ্রধান পদে প্রদীপ রায়কে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সমর সাহাকে। উপপুরপ্রধান থাকছেন অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে এই বদল করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই নতুন পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধানেরা আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।”
গত লোকসভা নির্বাচনে শহুরে ভোটে বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। শহরাঞ্চলের সেই ‘ক্ষত’ মেরামতের জন্য সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ‘দক্ষতা ও কর্মক্ষমতাকে’ বিচার করে অনেক দিন ধরেই পুর-প্রশাসনে রদবদলের ভাবনা চলছিল শাসকদলের অন্দরে। তার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত কয়েক মাস ধরে জেলা ও ব্লক স্তরে পরিবর্তনের কাজ চলেছে তৃণমূলে। শাসকদল সূত্রে খবর, এ বার পুর- প্রশাসনেও ‘ব্যর্থ’ পদাধিকারীদের সরিয়ে দিতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের মাপকাঠিও স্পষ্ট করে দিতে চাইছেন তাঁরা।
তৃণমূল সূত্র জানিয়েছে, গত এক দেড় মাস ধরে পুর এলাকায় ঘুরে ঘুরে পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান ও পুরপ্রতিনিধিদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে নানা তথ্য সংগ্রহ করেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূলের ভোট কুশলী সংস্থার প্রতিনিধিরাও খোঁজখবর নিয়েছেন। কলকাতায় একাধিক পুর প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। পুরসভায় পুরপ্রধানদের কাজ, দলের সঙ্গে সম্পর্ক, শহর রাজনীতিতে কোন পুরপ্রধানের কতটা প্রভাব, এ সব তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছিল। তা ছাড়া গত লোকসভা ভোটে ফলাফলও খতিয়ে দেখা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই এই রদবদল বলে মনে করা হচ্ছে।