Advertisement
E-Paper

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপতে পারে মকরসংক্রান্তি

মরসুমের গোড়া থেকেই রানের খরা চলছিল শীতের ব্যাটে। মকরসংক্রান্তিতে সেই ঘাটতি সুদে-আসলে পুষিয়ে দেওয়ার জন্য কোমর বেঁধে নামছে সে!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৭

মরসুমের গোড়া থেকেই রানের খরা চলছিল শীতের ব্যাটে। মকরসংক্রান্তিতে সেই ঘাটতি সুদে-আসলে পুষিয়ে দেওয়ার জন্য কোমর বেঁধে নামছে সে!

আজ, শনিবার পৌষ-সংক্রান্তিতে রাজ্যে জাঁকিয়ে শীতের সম্ভাবনা তো আছেই। সেই সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে অন্তত সাতটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে বলেও হাওয়া অফিসের খবর। একই পরিস্থিতি পড়শি রাজ্য বিহার আর ঝাড়খণ্ডেও। শুক্রবার শৈত্যপ্রবাহ বয়েছে ওই দুই রাজ্যেরই বেশ কিছু এলাকায়। রাঁচি এবং পটনাতেও শৈত্যপ্রবাহের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।

কলকাতায় উত্তুরে হাওয়ার দাপট মালুম হচ্ছিল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই। আর রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে যেন কামড় বসাচ্ছিল শীত। একই অবস্থা উত্তরের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার বীরভূমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি কম। জলপাইগুড়ি, কোচবিহারেও রাতের তাপমাত্রা রয়েছে স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি নীচে। বেশ কয়েক দিন পরে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে নেমে গিয়েছে মহানগরীতেও।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গে বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে শনিবার শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতার তাপমাত্রা আরও নেমে গিয়ে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের

কাছে থিতু হতে পারে।’’ আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, শনিবার শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে জলপাইগুড়ি, কোচবিহারেও। এবং দার্জিলিঙে

শূন্য ডিগ্রিতে গিয়ে ঠেকতে পারে রাতের তাপমাত্রা।

আবহাওয়া দফতরের খবর, এ দিন শৈত্যপ্রবাহ বয়েছে বিহারের গয়া ও ছাপরা এবং ঝাড়খণ্ডের চাইবাসা ও ডালটনগঞ্জে। রাঁচি, পটনা এবং পূর্ণিয়াতেও শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাঁচিতে রাতের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ছয় ডিগ্রিতে। পটনায় এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পাঁচ ডিগ্রি। ওই দুই রাজ্যে আজও শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা প্রবল।

শীতকালে কোনও এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি নীচে নেমে গেলে শৈত্যপ্রবাহের ঘোষণা করে হাওয়া অফিস। আবহবিদেরা বলছেন, সাধারণত মকরসংক্রান্তির আগে আগেই রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলা একাধিক বার শৈত্যপ্রবাহের মুখে পড়ে। কিন্তু এ চলতি মরসুমে শুধু শ্রীনিকেতনে শৈত্যপ্রবাহের দেখা মিলেছে। তা-ও মাত্র এক দিন। শীতের এই খরার জন্য আবহবিদেরা দুষছেন দুর্বল পশ্চিমি ঝঞ্ঝাকে। কারণ, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা, ভারী হাওয়া (পশ্চিমি ঝঞ্ঝা) উত্তর ভারতের পাহাড়ে বৃষ্টি-তুষারপাত ঘটায়। তার জেরে উত্তর-পশ্চিম ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ে। সেখান থেকে কনকনে ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়া বয়ে আসে পূর্ব ভারতের দিকে। কিন্তু এ বার ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত জোরালো ঝঞ্ঝা মেলেনি। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পরপর তিনটি জোরালো ঝঞ্ঝা দেশে ঢুকে কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডেও প্রবল তুষারপাত ঘটায়। তার পরেই দেশ জুড়ে গা-ঝাড়া দিয়েছে শীত।

দিল্লির মৌসম ভবনের খবর, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের একাংশে শৈত্যপ্রবাহ বয়েছে শুক্রবারেও। দেশের সমতল এলাকায় এ দিন সব থেকে কম তাপমাত্রা ছিল রাজস্থানের সিকারে (-১ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। সেখান থেকে ধেয়ে আসা কনকনে ঠান্ডা হাওয়াই শীতের শক্তি বাড়াচ্ছে পূর্ব ভারতে। আবহবিদেরা জানান, মাঘের গোড়াতেই কাশ্মীর, হিমাচলে ফের এক প্রস্ত তুষারপাত হবে। পৌষ-সংক্রান্তি কেটে যাওয়ার পরে তাপমাত্রা সামান্য বা়ড়তে পারে। তবে তার পরেই ফের নামবে পারদ। মাঘের প্রথম সপ্তাহে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা তার নীচেই থাকবে।

পারদ পতন

কোথায় কত*

• কোচবিহার ৫.৫ (-৪)

• জলপাইগুড়ি ৬.২ (-৪)

• শ্রীনিকেতন ৭.৬ (-৪)

• বাঁকুড়া ৯.৩ (-৩)

• মেদিনীপুর ১১.৫ (-২)

• কলকাতা ১৩.৫ (-১)

* সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বন্ধনীতে স্বাভাবিকের কত কম।

Wintry winds Makar Sankranti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy