Advertisement
E-Paper

‘হয় জয় শ্রীরাম বলো, নয় ২৫ হাজার টাকা দাও’, না-দেওয়ায় মারধর, দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ মালদহের পরিবারের

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ‘ভুয়ো তথ্য’ সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছেন বলে দিল্লির মন্দির মার্গ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কাঁথির বিজেপি সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার পাল্টা মমতা জানিয়েছেন, তিনি যা বলেছেন, তা-ই ঘটেছে দিল্লিতে। বুধবার ‘নির্যাতিত’ পরিবারকে কলকাতায় এনে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছে তৃণমূল।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৫:০৯
Malda\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s migrant laborer\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s family complains against Delhi Police after returning to Kolkata

বুধবার কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে (বাঁ দিকে) সাজনু পারভিন এবং ফিরহাদ হাকিম। ছবি: সংগৃহীত।

দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা দিল্লি পুলিশ মমতার বক্তব্যকে খণ্ডাতে ময়দানে নেমেছিল। বুধবার মালদহের সেই ‘নির্যাতিত’ পরিবারকে কলকাতায় এনে সাংবাদিক সম্মেলন করল তৃণমূল। পরিবারের অন্যতম সদস্য সাজনু পারভিনের অভিযোগ, দিল্লি পুলিশের লোকজন তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বলেছিল। তিনি ধর্মে মুসলিম হওয়ায় তা বলতে অস্বীকার করেন। তার পর তাঁর থেকে ২৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। তাঁকে এবং তাঁর শিশুসন্তানকে মারধর করা হয়েছে বলেও সরাসরি অভিযোগ করেছেন সাজনু।

গত রবিবার মমতা এক্স হ্যান্ডলে একটি শিশুর ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি জানিয়েছিলেন, বাংলা মাতৃভাষা হওয়ায় দিল্লি পুলিশ একরত্তিকেও বাদ দেয়নি। তাকেও আঘাত করা হয়েছে। সোমবার দিল্লি পুলিশ পাল্টা দাবি করে, ওই ভিডিয়ো ‘ভুয়ো’। মালদহের চাঁচলের স্থানীয় এক নেতার কথায় পাণ্ডবনগরে বসবাসকারী পরিবার ওই ভিডিয়ো তৈরি করেছিল। বুধবার সাজনু জানান, ওই ভিডিয়ো আদৌ সাজানো নয়। তাঁর এ-ও দাবি, দিল্লি পুলিশ যে সিসিটিভি ফুটেজ দেখাচ্ছে, তা আংশিক। যেখানে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানকার কোনও ফুটেজ নেই।

সাজনুর বক্তব্য, একদিন চার জন তাঁর বাড়িতে আসেন। নিজেদের ‘পুলিশ’ বলে পরিচয় দিয়ে আধার কার্ড দেখতে চান তাঁরা। খোঁজ করেন তাঁর স্বামী মোক্তার খানের। আধার কার্ড দেখানো সত্ত্বেও ওই চার জন সাজনুকে ‘বাংলাদেশি’ বলে দেগে দেন বলেই তাঁর অভিযোগ। তাঁরা যাতে এলাকা না ছাড়েন, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়। পরের দিন ফের চার জন আসেন তাঁর বাড়িতে। সেই সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন দুই মহিলাও। তাঁরাই সাজনু ও তাঁর সন্তানকে কোনও এক জায়গায় নিয়ে যান বলে দাবি। সাজনু বলেন, ‘‘সেখানেই আমাকে বলা হয় ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে। আমি বলি, আমি মুসলিম। আমি ওটা বলতে পারব না। তার পর আমার থেকে ২৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়।’’ সেখানেই তাঁকে এবং তাঁর সন্তানকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন সাজনু।

দিল্লি থেকে চাঁচলের পরিবারটিকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা নিয়েছেন তৃণমূলের দুই রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম এবং মৌসম বেনজির নূর। বুধবার দুই সাংসদের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কুণাল বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদ করার পরেই নির্যাতিত পরিবারের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে জায়গায় বাচ্চাটিকে ও তার মাকে মারধর করা হয়েছিল, সেই ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়নি। উল্টে পরিবারকে আটকে রেখে ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলা মানেই বাংলাদেশি। তাঁরা বলেছেন তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের মালদহের বাসিন্দা, তাও রেহাই পাননি।”

নির্যাতিত পরিবারটি দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করছে বলেও জানানো হয়েছে সাংবাদিক বৈঠকে। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ভুয়ো তথ্য সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছেন বলে দিল্লির মন্দির মার্গ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কাঁথির বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার মমতা পাল্টা জানিয়েছেন, তিনি যা বলেছেন, তা-ই ঘটেছে দিল্লিতে। বুধবার ‘নির্যাতিত’ পরিবারকে কলকাতায় ফিরিয়ে এনে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছে তৃণমূল। যা থেকে স্পষ্ট যে, এই ঘটনার জল আরও গড়াবে।

Migrant Workers CM Mamata Banerjee FirhadHakim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy