Advertisement
E-Paper

বৌদির জেলায় দিদির মুখে নেই এইমসের কথা

গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের হাত ধরার পরেও জেলা থেকে মাত্র দু’টি আসন জোটে তৃণমূলের। এ বার বিরোধীদের জোট হওয়ার পরে তা-ও জুটবে কি না, ঘোরতর সন্দেহ উত্তর দিনাজপুরের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪০
ডাবগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

ডাবগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের হাত ধরার পরেও জেলা থেকে মাত্র দু’টি আসন জোটে তৃণমূলের। এ বার বিরোধীদের জোট হওয়ার পরে তা-ও জুটবে কি না, ঘোরতর সন্দেহ উত্তর দিনাজপুরের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনে। এই পরিস্থিতিতে সভা করতে এসে ভোটারদের কাছে কার্যত কাতর আবেদন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক যে ভাবে তিনি আর্জি রেখেছিলেন মালদহ বা মুর্শিদাবাদে। কিন্তু কয়েকটি কাঁটার জ্বালায় এখনও দগ্ধাতে হচ্ছে তৃণমূলকে। এই জ্বালা কমাতে ভোটাররা মলম নিয়ে হাজির হবেন কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েই গিয়েছে।

উত্তর দিনাজপুরে তৃণমূলের প্রথম কাঁটা এইমস। ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করলেও তৃণমূল সরকার তা আটকে দিয়েছিল, অভিযোগ কংগ্রেস ও বাম নেতাদের। শেষ পর্যন্ত সেই হাসপাতাল পেয়েছে কল্যাণী। কংগ্রেস ও বাম নেতাদের দীর্ঘ আন্দোলন ও এই নিয়ে লাগাতার প্রশ্নের মুখে এ বারে মমতা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে পারেন বলে আশা করেছিলেন দলীয় কর্মীদের একাংশ। তাঁদের কারও কারও বক্তব্য, বিরোধীরা যখন এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তখন জবাব দেওয়ার মতো কিছু থাকে না। ‘‘আশা করেছিলাম, দিদি কিছু বলবেন। তাতে আমরা জবাব দিতে পারব,’’ বলছেন ওঁরা।

কিন্তু এ দিন ইটাহারের সভায় এইমস প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন মমতা। যা দেখে হতাশ দলের কর্মীদের বড় অংশ। আর খুশি বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, মমতার এই মুখ না খোলার অর্থ, তাঁর কাছে কোনও জবাব নেই। অর্থাৎ, রায়গঞ্জ নিয়ে বিরোধীদের আন্দোলনই সার্থক। এটা যদি প্রথম কাঁটা হয় তা হলে দ্বিতীয়টি অবশ্যই রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ ও ইটাহারের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজে বহিরাগতদের তাণ্ডব। রায়গঞ্জে গোলমালের ঘটনা নিয়ে তো খোদ শিক্ষামন্ত্রীকেও মুখ খুলতে হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের জামিনের ব্যবস্থা করে দিয়ে সে বারে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন। অভিযোগ, পরেও এই ইউনির্ভাসিটি কলেজে একাধিক বার তাণ্ডব চালিয়েছে টিএমসিপি আশ্রিত বহিরাগতরা। এবং বিষয়টি ভাল চোখে দেখেননি স্থানীয় মানুষ।

ঘটনা হচ্ছে, এই দুই কাণ্ডের মূল মাথা, তিলক চৌধুরী এবং গৌতম পালকে ডেকে নিয়ে প্রায় দশ মিনিট একান্তে কথা বলেন মমতা। রায়গঞ্জে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারকে নিগ্রহের পিছনে তিলক চৌধুরীর মাথা— এমনই অভিযোগ করেন বিরোধীরা। তাঁদের আরও দাবি, মেঘনাদ সাহা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত গৌতম পাল। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, গৌতম পালের স্ত্রীকে টুকলি করতে না দেওয়াতেই এই হামলা চালানো হয়।

মমতা এ দিন এই দু’জনকে কাছে নিয়ে আলোচনা করায় অন্য আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ। তাঁদের ভয়, এর ফলে ভোটের আগে নতুন করে গোলমাল বাঁধার সমূহ সম্ভাবনা। তাঁদের প্রশ্ন, তা-ই যদি হয়, তা হলে মমতা কাতর ভাবে এ দিন কেন বললেন, বলুন তো গত পাঁচ বছরে জেলা কী পায়নি? কেন এত উন্নয়নের ফিরিস্তি দিলেন। এর পরেই মমতার প্রশ্ন, ‘‘আমরা কি ভোট আশা করতে পারি না? কেনও তৃণমূলের প্রার্থীরা ভোট পাবেন না?’’

এ দিন ইসলামপুর, গোয়ালপোখরের সভাতেও তিনি জোটকে তীব্র আক্রমণ করেন। বৌদি দীপা দাশমুন্সি ভবানীপুরে প্রার্থী। সেখানে গিয়ে প্রচার করছেন। তাঁর এলাকা গোয়ালপোখরে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, কংগ্রেস এখন সিপিএমের কাঁধে চেপে ঘুরছে।

assembly election 2016 Mamata Bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy