Advertisement
E-Paper

‘সমাজমাধ্যমে সক্রিয় নন কেন?’ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অসন্তোষ মমতার, উষ্মা দুই দফতরের কাজ নিয়েও

বুধবার মেয়ো রোডের সভা থেকেও দলীয় নেতৃত্বকে সমাজমাধ্যমে সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। এর পর মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তিনি সদস্যদের এই সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ২২:০৩
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

সমাজমাধ্যমে সক্রিয় হতে হবে মন্ত্রীদের। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার সেই বার্তাই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই সমাজমাধ্যমে সক্রিয় নন। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে দলের সপক্ষে প্রচারে সমাজমাধ্যম বড় ভূমিকা নিতে পারে। মন্ত্রীদের সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মমতা। তাঁর এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্ট শেয়ার করে প্রচারের ঝাঁজ আরও বৃদ্ধি করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যের দু’টি দফতরের কাজ নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বুধবার তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মেয়ো রোডে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মমতা এবং অভিষেক। সভায় উপস্থিত দলের অন্য নেতানেত্রীদের উদ্দেশে সমাজমাধ্যম নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। ভাষণের মাঝেই মঞ্চে পিছন ফিরে মমতা বলে ওঠেন, ‘‘আপনারা কেন সমাজমাধ্যমে সক্রিয় নন? পার্টি যখন করছে, আপনাদেরও এই কাজ করতে হবে।’’ দলের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘ভুয়ো ভিডিয়োর বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে আমাদের লড়াই করতে হবে। দলে যাঁরা আছেন, ব্লক সভাপতি, কাউন্সিলর, বিধায়ক, সাংসদ— সকলকে এই কাজ করতে হবে। ওরা ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়াচ্ছে। আমাদের সত্যিটা বলে তার মোকাবিলা করতে হবে।’’

সূত্রের খবর, এর পর মন্ত্রিসভার বৈঠকেও মন্ত্রীদের একই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তাঁর নির্দেশ, তাঁর এবং অভিষেকের পোস্ট শেয়ার করে দলের বক্তব্য প্রচার করতে হবে মন্ত্রীদের। এই কাজ বাধ্যতামূলক।

সূত্রের খবর, রাজ্যের সেচ এবং পঞ্চায়েত দফতরের কাজ নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মমতা। ওই দফতরগুলির দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীদের সতর্কও করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘এই দুই দফতর নিয়ে নানাবিধ অভিযোগ আসছে। আমার কাছে প্রত্যেক জেলা থেকে রিপোর্ট আসছে।’’ আরও ভাল করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি এবং আইন দফতরকেও। বৈঠকে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষের অসুবিধা হচ্ছে, এমন কিছু চলতে থাকলে তিনি ছেড়ে কথা বলবেন না। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বেশ কিছু দিন ধরে সেচ দফতরের দায়িত্বে কেউ ছিলেন না। লোকসভা নির্বাচনে পার্থ ভৌমিককে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তখন তিনি রাজ্যের সেচমন্ত্রী। তার পরেই তিনি ওই দফতরের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি সেচ দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মানস ভুঁইয়াকে।

রাজ্যের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা বুধবারের বৈঠকে অন্য একটি বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি জানান, ওড়িশায় বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকেরা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে কথাও বলতে বলেছেন।

উল্লেখ্য, গত রবিবার তৃণমূলের সমাজমাধ্যমের এক কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন দলের রাজ্য স্তরের নেতারা। সেখান থেকেই সমাজমাধ্যম বিতর্কের সূত্রপাত। ওই অনুষ্ঠানে দলের একাংশের নেতার বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। অভিযোগ ছিল, নেতারা সমাজমাধ্যমে সক্রিয় নন। ফলে সমাজমাধ্যমকে হাতিয়ার করে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে সমস্যা হচ্ছে। দলের অনেক নেতা যে মমতা বা অভিষেকের পোস্টও শেয়ার করেন না, স্বীকার করে নেন কুণাল ঘোষও। এ বিষয়ে দলের তরফে সদর্থক পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল কর্মীদের। তার পরেই বুধবার মমতা নিজে দলীয় নেতৃত্বকে সমাজমাধ্যমে সক্রিয় হতে বললেন। নেত্রীর নির্দেশের পর রবিবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা এক নেতা বলেন, ‘‘সে দিন আমাদের বেইজ্জত হতে হয়েছিল। দিদি আজ আসল কথাটা বলে দিয়েছেন। আশা করব, দোদুল্যমানতা ছেড়ে দলের সর্ব স্তরের নেতাকর্মীরা সমাজমাধ্যমে বিজেপির পাল্টা ন্যারেটিভ (আখ্যান) তৈরি করবে।’’

West Bengal Cabinet Meeting Mamata Banerjee Nabanna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy