Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গোষ্ঠীবাজিতে না, সংযোগে জোর নেত্রীর

হবিবপুরের সভাতেই মমতা নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ, কল্যাণীর বিধায়ক রমেন বিশ্বাসকে মানুষের কথা শোনার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কল্লোলকে তিনি বলেন, “তোমাকে আর কিছু দেব না। প্রচুর দিয়েছি। এ বার বলো, নিজে কী করেছ? সপ্তাহে ক’দিন পাবলিক মিট করো? সরকার যা করার করেছে।

বক্তা: রানাঘাটে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

বক্তা: রানাঘাটে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

সম্রাট চন্দ ও সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর ও হবিবপুর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৬
Share: Save:

প্রশাসনিক সভাতেই দলের বিবদমান নেতাদের সতর্ক করেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে কৃষ্ণনগরে এসে তার ঝাঁঝ এক কাঠি বাড়ল। মোদ্দা বক্তব্য একই, লোকসভা ভোট আসছে। কোনও রকম গোষ্ঠীবাজি না করে জনসংযোগ বাড়াতে একযোগে ঝাঁপাতে হবে।

হবিবপুরের সভাতেই মমতা নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ, কল্যাণীর বিধায়ক রমেন বিশ্বাসকে মানুষের কথা শোনার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কল্লোলকে তিনি বলেন, “তোমাকে আর কিছু দেব না। প্রচুর দিয়েছি। এ বার বলো, নিজে কী করেছ? সপ্তাহে ক’দিন পাবলিক মিট করো? সরকার যা করার করেছে। তুমি কী করেছ? সব বিধায়করা কি পাবলিক মিট করে?” কল্লোল কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করলে আরও খেপে যান তিনি। রমেন্দ্রনাথকেও বলেন, “মানুষের কথা শুনুন। আমাদের সময়ে তো কিছুই ছিল না। এখন হাসপাতালে চিকিৎসাও বিনা খরচে হচ্ছে।”

শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে ও বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যকে নিজেদের গন্ডগোল মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তিনি যে আর এটা বরদাস্ত করবেন না তা স্পষ্ট করে দিয়ে তিনি বলেন, “অজয় তুমি পুরপ্রধান, বিধায়কও ছিলে। অরিন্দম তুমি বিধায়ক। কেন এমন হয়? সমস্যা মিটিয়ে নিতে হবে। এখানে আমি রাফ অ্যান্ড টাফ।” চাকদহের বিধায়ক তথা মন্ত্রী রত্না ঘোষ এবং প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তীকেও গন্ডগোল মেটাতে নির্দেশ দেন ওই সভা থেকেই। মঞ্চে বসে থাকা রত্নাকে তিনি কড়া ভাবেই বলেন, “দীপকের সঙ্গে যে সমস্যা ছিল তা কি মিটেছে? মিটিয়ে নাও। যেন আর না শুনি।”

পরে কৃষ্ণনগরে দলের নেতাদের নিয়ে সভায় অনুব্রত মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানানোর পাশাপাশি বিশেষত রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের নেতাদের ধমকেছেন দলনেত্রী। দলের নিচুতলায় অঞ্চল সভাপতি, নানা শহর কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে দলের জেলা নেতৃত্ব এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে দেন, লোকসভা ভোটকেই তাঁরা পাখির চোখ করছেন। কল্লোল তো তোপের মুখে পড়েছেনই, কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের বিধানসভা এলাকায় দল ভাল ফল করা সত্ত্বেও তিনি ছাড় পাননি। রানাঘাট এবং কৃষ্ণনগর লোকসভা এলাকায় দলের সাংগঠনিক দায়িত্বও ভাগ করে দিয়েছেন তিনি। রানাঘাটে দলের সংগঠন দেখাশোনা করবেন বিধায়ক এবং জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর সিংহ। কৃষ্ণনগর লোকসভা এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন পুরপ্রধান অসীম সাহা এবং করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। সাহায্য করবেন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত এবং উজ্জ্বল বিশ্বাস।

নেত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে দলের একাধিক নেতাকে। পঞ্চায়েত ভোটের পরেই কৃষ্ণগঞ্জের দলের ব্লক সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোষ চৌধুরীকে অপসারিত করা হয়।

এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক এবং জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাসের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেত্রী। রীতিমত ক্ষোভের সুরেই নেত্রী সত্যজিৎকে বলেন, ‘‘সবই কি তোমার লোক হবে?’’ অবিলম্বে তিনি লক্ষ্মণকে ব্লক সভাপতি পদে ফেরাতে বলেছেন বলেও দলীয় সূত্রের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee TMC Administrative Meeeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE