Advertisement
E-Paper

গণপিটুনি বিরোধী বিল আটকে আছে রাজভবনে, বিদ্বজ্জনদের সঙ্গে চা-চক্রে ক্ষোভপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

আলিপুরের ‘সৌজন্য’ প্রেক্ষাগৃহে বৃহস্পতিবার বিদ্বজ্জনদের একাংশের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই কথায় কথায় উঠে আসে রাজ্যে একাধিক গণপিটুনির ঘটনার প্রসঙ্গ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৩
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

গণপিটুনি বিরোধী বিল পাশ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে তা রাজভবনে আটকে আছে। বৃহস্পতিবার আলিপুরে বিদ্বজ্জনদের একাংশের সঙ্গে এক চা-চক্রে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিদ্বজ্জনদের ওই অংশের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী ওই বিল নিয়ে আক্ষেপ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যে আইনটি চালু হলে হয়তো এত গণপিটুনির ঘটনা ঘটত না।

আলিপুরের ‘সৌজন্য’ প্রেক্ষাগৃহে বৃহস্পতিবার বিদ্বজ্জনদের একাংশের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুরা মিলে ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’ বলে একটি সংগঠন তৈরি করেছেন। তাতে রয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীরা। সেই সংগঠনই সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছিল বলে জানা যায়। সময় দিয়েছিলেন মমতা। বৃহস্পতিবার তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় গণপিটুনির প্রসঙ্গ ওঠে। সম্প্রতি রাজ্যে গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। সে প্রসঙ্গেই ওই আইন নিয়ে আক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে রাজ্য বিধানসভায় গণপিটুনি বিরোধী বিল পাশ হয়েছিল। সেখানে গণপিটুনির ঘটনায় কড়া শাস্তির কথা বলা হয়েছিল। সেই বিল রাজ্যপালের সম্মতির জন্য পাঠানো হয় রাজভবনে। কিন্তু রাজ্যপাল সেই সময়ে তাতে স্বাক্ষর করেননি। ওই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনখড়। তাঁর অভিযোগ ছিল, যে বিল বিধানসভায় পাশ হয়েছে এবং যে বিল রাজভবনে পাঠানো হয়েছে, তা আলাদা। এ বিষয়ে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছিল স্পিকারের কাছে। সম্প্রতি, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁর তরফে বিল নিয়ে সমস্ত প্রকার বক্তব্য রাজভবনে জানানো হয়ে গিয়েছে। ধনখড়ের মেয়াদ ফুরোনোর পর বাংলার ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল হয়ে কিছু দিনের জন্য এসেছিলেন লা গণেশন। এর পর রাজ্যপাল হয়ে আসেন সিভি আনন্দ বোস। তবে বিলটি এখনও রাজ্যপালের স্বাক্ষরের অভাবে রাজভবনেই আটকে আছে।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের আলাপচারিতায় বিদ্বজ্জনদের ওই অংশের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর সরকার গণপিটুনির মতো ঘটনার ঘোর বিরোধী। কিন্তু রাজভবনে বিল আটকে থাকায় এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের কিছু ঘটনার উল্লেখও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

গত কয়েক দিন ঘরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর পর গণপিটুনির খবর প্রকাশ্যে এসেছে। খাস কলকাতায় পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বৌবাজারের হস্টেলে মোবাইল চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে মারা হয়। সল্টলেকেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্দেহের বশে গণপিটুনির খবর আসতে থাকে। প্রশাসনের তরফে এর বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হলেও প্রবণতা থামানো যাচ্ছে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। তার মাঝে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর চা-চক্রেও সেই প্রসঙ্গ উঠে এল। বৃহস্পতিবার আলিপুরের চা-চক্রে কবীর সুমন, নচিকেতা চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল সেন এবং প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরা গান গেয়েছেন। কবিতা পাঠ করেছেন জয় গোস্বামী। সব মিলিয়ে সাংস্কৃতিক আবহ তৈরি হয়েছিল ওই আলাপচারিতায়।

Mamata Banerjee Lynching Man Beaten to Death Man Beaten
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy