Advertisement
১৯ মে ২০২৪

প্রচারের সুরে তিন আশ্বাস মমতার

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পরে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে নির্দেশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। আবাস যোজনায় বাড়ি করার টাকা দু’টি কিস্তিতেই পৌঁছবে আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

হস্তান্তর: গৃহহীনদের বাড়ির জন্য শংসাপত্র দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজি ইন্ডোরে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

হস্তান্তর: গৃহহীনদের বাড়ির জন্য শংসাপত্র দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজি ইন্ডোরে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৯
Share: Save:

কৃষিজমির খাজনা মকুব। গৃহহীনদের বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়ার নিয়ম শিথিল। আর রাজ্য জুড়ে কয়েক হাজার কিলোমিটার রাস্তা।

তিন আশ্বাসে সোমবার নিজের আগামী কর্মসূচি স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এটা নিছক উন্নয়ন কর্মসূচি ঘোষণা নয়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আসলে এ ভাবেই তিন তালে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রচারের সুরটি বেঁধে দিলেন।

পঞ্চায়েত দফতরের এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় গৃহহীনদের বাড়ি তৈরির নিয়ম শিথিল করছে রাজ্য সরকার। নতুন ব্যবস্থায় বরাদ্দ টাকা চার কিস্তির বদলে দুআ কিস্তিতে দেওয়া হবে। তবে এই নিয়ম শিথিল করার প্রক্রিয়া কী হবে, তা অবশ্য এ দিন স্পষ্ট করেনি রাজ্য সরকার।

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘আবাস বিতরণ দিবস’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘চার বারে টাকা দিলে আবেদনকারী চুন, সিমেন্ট, ইট কিনবেন কী ভাবে! ওই টাকা দু’বারে দেওয়া যেতে পারে। এটা সরকারি প্রক্রিয়া। তবে বাস্তব অসুবিধার কথা অস্বীকার করা যায় না। চার বারের বদলে দু’বার করলে সুবিধাই হবে।’’

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পরে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে নির্দেশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। আবাস যোজনায় বাড়ি করার টাকা দু’টি কিস্তিতেই পৌঁছবে আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। নিয়ম অনুসারে চার কিস্তিতেই বাড়ি তৈরির টাকা পাওয়ার কথা আবেদনকারীর। সেই নিয়ম ভেঙে কী ভাবে দু’টি কিস্তিতে টাকা দেওয়া হবে, পঞ্চায়েতমন্ত্রী তা জানাননি। এ দিন পাঁচ লক্ষাধিক আবেদনকারীর হাতে আবাস যোজনা সংক্রান্ত শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। পুরো প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অন্তর্ভুক্ত। যদিও পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নামই এখানে বাংলা আবাস যোজনা করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্র, ৪০ শতাংশ দেয় রাজ্য।’’

রাজ্যে ৫৪ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি রয়েছে। তার সম্পূর্ণ খাজনাই ২০১৭ সাল থেকে মকুব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে এই বিষয়টিকে অন্যতম অস্ত্র করতে পারে শাসক দল। এ দিনের অনুষ্ঠানে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই। তিনি বলেন, ‘‘কৃষিজমির খাজনা মকুব করা হয়েছে, এটা কৃষকদের বলবেন।’’

বাড়ি তৈরি এবং কৃষিজমির খাজনা মকুবের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য জুড়ে নতুন রাস্তা তৈরির কথাও বলা হয়েছে এ দিন। ঘোষণা করা হয়, আট হাজার কিলোমিটার রাস্তার তৈরির সূচনা হবে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি। ‘‘সব কিছু ঠিক থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে ৪০ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির লক্ষ্যে পৌঁছনো যেতে পারে,’’ আশা পঞ্চায়েতমন্ত্রীর। রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করার বিষয়টিকেও এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE