বছরের শুরুতে তৈরি হওয়া প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার মিলিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজ শেষ করতে হবে বলে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কী ভাবে সে কাজ করা সম্ভব, তা সোমবার নবান্ন-লাগোয়া নতুন প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠকে বুঝিয়েও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি দফতরের সচিবদের তাঁর নির্দেশ, সপ্তাহে অন্তত এক দিন বিভাগীয় সব অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করে কাজের হিসেব নিন।
নবান্নের শীর্ষকর্তাদের বক্তব্য, বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট সেরে ফেলতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই হিসেবে পুজোর মাস বাদ দিলে হাত রয়েছে তিন মাস। তার মধ্যে কাজের লক্ষ্য পূরণ করে ভোটে যেতে চান মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন বৈঠকে সরকারি কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেন মমতা। সচিবদের বলেন, দফতরের ভাল কাজ আরও বেশি করে মানুষের মধ্যে প্রচার করতে হবে। সব দফতরকে যথাযথ ফাইল-ট্র্যাকিং প্রক্রিয়া এবং ই-গভর্ননেন্স প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে। অর্থ দফতরকে তাঁর নির্দেশ, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পিএল অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে পাঠিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: মামলায় নাকাল, মমতার তোপে মলয়
বৈঠকের শুরুতে মুখ্যসচিব মলয় দে প্রান্তিক মানুষদের কাছে কম খরচে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। সমালোচনার সুরে তিনি বলেন, জেলায় জেলায় তৈরি কিষাণ মান্ডিগুলি এখনও সে ভাবে কার্যকর হয়নি। তাঁর পরামর্শ, মান্ডিগুলিকে কার্যকরী করতে সেখানে আরও কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করা এবং স্থানীয় বাজারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। মুখ্যসচিবের সুরেই সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব রাজেশ সিংহের কাজে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘বহু দিন শুনছি হচ্ছে-হবে। এখনও বেশির ভাগ কিষাণ মান্ডিতে কাজ শুরু হল না কেন?’’
১০০ দিনের কাজের হিসেব নিতে গিয়ে কোচবিহার, পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসকদের কাজে মৃদু অসন্তোষ প্রকাশ করে তাঁদের আরও ভাল করে কাজ করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রের খবর, ওই চারটি জেলায় এখনও ২৫ দিনের কম শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। সরকারের ২০টি দফতর কেন এখনও মাত্র পনেরো শতাংশ টাকা খরচ করেছে, তা নিয়েও ক্ষোভ জানান মমতা। তবে ভাল কাজের জন্য সেচ, বিদ্যুৎ, পঞ্চায়েত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি এবং নগরায়ন দফতরের প্রশংসা করেন তিনি।
বৈঠকে ডেঙ্গি, এনসেফেলাইটিস নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ দমদম, খড়্গপুর, জলপাইগুড়িতে যে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে, তা-ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মনে করিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাস্থ্য-কর্তারা জানান, এনসেফেলাইটিসের ভ্যাকসিন চালুর পরে রোগের প্রকোপ অনেক কমেছে।
আইসিডিএস কেন্দ্রগুলিকে আরও কার্যকর করার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। এই কাজে ঝাড়গ্রাম জেলা বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওই জেলাশাসককে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি দেখার নির্দেশও দেন।
পরে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এ দিনের বৈঠকে ফাইল ট্র্যাকিং থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজ সব কিছু নিয়েই আলোচনা করেছি। বন্যায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের কী ভাবে সাহায্য করা যায়, আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy