দলের বুথ স্তরের এজেন্টদের (বিএলএ ২) এসআইআরের শুনানি কক্ষে প্রবেশের দাবিতে আরও সুর চড়াল তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মঙ্গলবার বাঁকুড়া বড়জোড়ার সভা থেকে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কোন আইনে বিএলএ-দের ঢুকতে দেওয়া হবে না?’’ বিএলএ-দের সব জায়গায় শিবির করে বসে মানুষের যে নথি প্রয়োজন, তা জোগাড় করে দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। বিএলএদের ঢুকতে না দেওয়ায় এ দিন হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লক অফিসে গিয়ে ঘণ্টাখানেক শুনানি বন্ধ করে দেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার।
বিএলএদের শুনানিতে ঢুকতে না দেওয়ায় সোমবার বহু জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছিল। রাজ্যের তিন জায়গায় শুনানি সাময়িক ভাবে বন্ধও হয়ে যায়। এ ব্যাপারে সরকারি আধিকারিকেরা লিখিত নির্দেশের পরিবর্তে ওয়টস্যাপ-বার্তা দেখিয়েছেন, এমন দাবিও শোনা যায়। সে সূত্রেই এ দিন বড়জোড়ার সভা থেকে মমতার প্রশ্ন, ‘‘সারাক্ষণ ওয়টস্যাপ করছে। ৫০ বার ৫০ রকম ওয়টস্যাপ। ওয়টস্যাপের কী মূল্য? ...বুকের পাটা থাকলে লিখিত দিন। কারণ, আমি আদালতে যাব। জনতার আদালতে।’’
কমিশনের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘এনুমারেশনের সময়ে বিএলএ থাকবে, ভোটকেন্দ্রে বিএলএ থাকবে। তা হলে তুমি যখন এক কোটি ৩৬ লক্ষের নাম বাদ দিচ্ছ, তখন কেন বিএলএ থাকবে না!’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির বিএলএ নেই। এজেন্সি ঢুকিয়ে কাজ করায়। আমরা তো বলছি, বিজেপি থাকুক, সিপিএম থাকুক, কংগ্রেস থাকুক। কারও যদি বিএলএ না থাকে, আমি কী করতে পারি?’’
বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক বিমান ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘কমিশন সর্বদলীয় বৈঠকেই শুনানিতে বিএলএ-রা থাকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিল। বাকি সব দল যখন মানছে, তখন তৃণমূলের আপত্তি কেন?’’
বিএলএ-দের সতর্ক করে মমতা বলেন, ‘‘এখন আমাদের কোনও পিকনিক নেই, উৎসব নেই। একটাই উৎসব, গণতন্ত্রের উৎসব আর বিজেপিকে বিসর্জনের উৎসব। প্রত্যেক বিএলএ দেখবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত ভোটারের নাম না উঠছে, কেউ এলাকা ছাড়বেন না।’’
চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত এ দিন পোলবা-দাদপুর ব্লক অফিসে গিয়ে বিএলএদের শুনানি কক্ষে প্রবেশের দাবি তুললেও মানেননি বিডিও জগদীশচন্দ্র বারুই। লিখিত ভাবে তা জানাতেও অস্বীকার করেন। এর পরেই ঘণ্টাখানেকের জন্য শুনানি বন্ধ করে দেন অসিত। পরে সেখানে উপস্থিত হন সপ্তগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত। ওই ব্লক অফিসে সপ্তগ্রামেরও শুনানি চলছিল। তপন দাবি করেন, তাঁর বিধানসভার বিএলএ-রা শুনানিতে থাকছেন। বিডিও তপনের দাবি উড়িয়ে বলেছেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ মেনে সব জায়গাতেই বিএলএ-দের অনুপস্থিতিতে শুনানি হচ্ছে। তবে কিছু বিএলএ-র শুনানিতে ডাক পড়েছে। তখন তাঁরা উপস্থিত থাকতে পারেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)