Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
4 States Assembly Election Result

তিন রাজ্যে বিজেপির জয় এবং কংগ্রেসের হারে রায় জানালেন মমতা, আসলে হার কার? বললেন তা-ও

রবিবার প্রকাশ্যে কিছু বলেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সোমবার জানিয়ে দিলেন রবিবারের চার রাজ্যের ফলাফল নিয়ে তিনি কী মনে করেন। জানিয়ে দিলেন, এর পরেও বিজেপি লোকসভা ভোটে হারবে।

Mamata Banerjee says Congress lost election but not people after BJP sweeps in 3 states

নরেন্দ্র মোদী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:১০
Share: Save:

মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে বিজেপি। শুধু তেলেঙ্গানায় জয় কংগ্রেসের। রবিবার ফল ঘোষণার পর নীরবই ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ খুললেন সোমবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে। সেখানে স্পষ্ট ভাষাতেই তাঁর রায় জানালেন ‘ইন্ডিয়া’-র সঙ্গী দল কংগ্রেস সম্পর্কে। মমতা বলেন, ‘‘এটা কংগ্রেসের হার, মানুষের পরাজয় নয়।’’

রবিবার কংগ্রেস যে ফল করেছে, তার পরে ৬ ডিসেম্বর মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা ‘ইন্ডিয়া’-র বৈঠকে মমতা যোগ দেবেন কি না তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল মমতা ওই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাবেন না। ঘনিষ্ঠমহলে মমতা এমনও জানিয়েছিলেন যে, তিনি কোনও ফোন পাননি। তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, ৬ তারিখের বৈঠকের জন্য কোনও আনুষ্ঠানিক চিঠিও তারা পায়নি সোমবার বিকেল পর্যন্ত। মমতা সোমবার প্রকাশ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ওই বৈঠকে যাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘৬ তারিখের বৈঠক সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। আমি কিছুই জানি না। অভিষেকও উত্তরবঙ্গ চলে গিয়েছএ। আমিও যাব। আমার সঙ্গে কারও কোনও কথা হয়নি।’’ উল্লেখ্য, আনন্দবাজার অনলাইন রবিবারেই লিখেছিল, মমতা ওই বৈঠকে থাকবেন না। তিনি ওইদিন থাকবেন উত্তরবঙ্গে।

৬ ডিসেম্বর, বুধবার থেকেই মমতার উত্তরবঙ্গে থাকার কথা। ফিরবেন ১২ ডিসেম্বর। ওই সফরের প্রথম দু’দিন কার্সিয়াঙে পারিবারিক অনুষ্ঠান এবং বাকি চার দিন বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচিতে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।

হিন্দিবলয়ে রবিবার তিন রাজ্যে জয়ের পরে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘এই হ্যাটট্রিক বলে দিচ্ছে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারও হ্যাটট্রিক করতে চলেছে।’’ বিজেপি নেতারাও দাবি করতে শুরু করেছেন, কেন্দ্রের সরকারের কাজের জন্যই মানুষ এই রায় দিয়েছে। তবে মমতা সেই দাবিকে গুরুত্ব দিতে রাজি হননি। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘বাবুরা একটা বেশি (রাজ্য) পেয়েছে আর কংগ্রেস একটায় হেরেছে একটা পেয়েছে। কংগ্রেসের থেকে ছত্তীসগঢ় আর রাজস্থান নিয়ে নিয়েছে। আবার কংগ্রেস তেলঙ্গানায় জিতেছে।” পাশাপাশিই তিনি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস হেরেছে বলে আমাদেরও খারাপ লাগছে। আমরাও চেয়েছিলাম, কংগ্রেস জিতুক।’’

এর পরেই জোটের প্রসঙ্গে আসেন মমতা। বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া জোটের শরিকেরা কেউ না কেউ ভোট কেটেছে। সেই জন্য বলছি, আসন সমঝোতা করতে। আসন সমঝোতা করলে এটা হত না।” বিধানসভায় মমতা এ-ও বলেন যে, “আমি এখনও মনে করি আসন সমঝোতা করলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি আসবে না। ইন্ডিয়া জোট একসঙ্গে কাজ করবে। কিছু ভুল থাকলে শুধরে নেবে।”

কংগ্রেসের হারের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এটাও উঠে এসেছে যে, শআসন সমঝোতার প্রশ্নে শরিকদের সঙ্গে ‘দাদাগিরি’ করেছে রাহুল গান্ধীর দল। অনেক শরিককেই চাহিদামতো আসন দেয়নি। ফলে ভোট কাটাকাটি হয়েছে (রাজস্থানে যেমন কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ মাত্রই ২ শতাংশ)। সেই বক্তব্যই সোমবার স্পষ্ট হল মমতার কথায়। প্রথম থেকেই জোট নিয়ে মমতার ফর্মুলা ছিল, যে দল যে রাজ্যে শক্তিশালী সেখানে তারাই হবে জোটের ‘নিয়ন্ত্রক’। আসন সমঝোতার উপরেও জোর দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। কংগ্রেস হিন্দি বলয়ে পর্যুদস্ত হওয়ার পরে যে বাকি জোটসঙ্গীরা রাহুলদের উপর আসন সমঝোতা নিয়ে ‘চাপ’ বাড়াতে পারে, সেই ইঙ্গিতই ছিল মমতার কথায়। তবে তিনি স্পষ্ট করে এ বিষয়ে কিছু বলেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE