Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Mamata Banerjee

‘ন্যায্য আন্দোলনকারীদের ভালবাসি’, পর্ষদের সুরেই টেট-বিক্ষোভ নিয়ে মন্তব্য করলেন মমতা

সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে পর পর দুই আন্দোলনের মাধ্যমে ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা। সম্ভবত সেই কারণেই ক্ষমতায় আসার ১১ বছর কেটে যাওয়ার পরেও আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করেননি মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, যাঁরা ন্যায়ের পথে রয়েছেন, একমাত্র সেই আন্দোলনকারীদের তিনি ‘ভালবাসেন’।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, যাঁরা ন্যায়ের পথে রয়েছেন, একমাত্র সেই আন্দোলনকারীদের তিনি ‘ভালবাসেন’। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৩৯
Share: Save:

টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও একই ভাবে স্পষ্ট বিভাজনরেখা টেনে দিলেন ‘ন্যায্য’ এবং ‘অন্যায্য’ আন্দোলনের মধ্যে। উত্তরবঙ্গ সফর সেরে বৃহস্পতিবার কলকাতায় পৌঁছন মমতা। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় সল্টলেকে টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন নিয়ে। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যাঁরা ন্যায়ের পথে রয়েছেন, একমাত্র সেই আন্দোলনকারীদের তিনি ‘ভালবাসেন’।

সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে পর পর দুই আন্দোলনের মাধ্যমেই ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা। তাঁর হাতেই সাড়ে ৩৪ বছরের বামশাসনের ইতি লেখা হয়েছিল। সম্ভবত সেই কারণেই ক্ষমতায় আসার ১১ বছর কেটে য়াওয়ার পরেও তাই আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করেননি মমতা। শুধু আন্দোলনকে ‘ন্যায্য’ আর ‘অন্যায্য’তে ভাগ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের আমি ভালবাসি। যাঁরা ন্যায্য আন্দোলন করছেন তাঁদের।’’

ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়েই চাকরির দাবিতে সোমবার থেকে সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরের সামনে আন্দোলন করছেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তেরা। আমরণ অনশনও শুরু করেছেন তাঁদের একাংশ। অন্য দিকে, পর্ষদের নতুন সভাপতি গৌতম পাল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, টেট উত্তীর্ণদের নতুন করে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে। আইনের পথেই তাঁদের চাকরি দেওয়া হবে। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলনকে ‘অন্যায্য’ বলেছেন তিনি।

বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও পর্ষদ সভাপতিকে সমর্থন করেছিলেন। অতঃপর বৃহস্পতিবার মু্খ্যমন্ত্রীও স্বকীয় ভঙ্গিতে একই কথা বললেন। পাশাপাশিই বলে দিলেন, ‘‘এই নিয়ে যা বলার, ব্রাত্য বলবে।’’

বৃহস্পতিবার টেট আন্দোলন ঘিরে নতুন যে জট তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়টি কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের বিরোধিতা করে সল্টলেকেই পর্ষদের দফতরের অদূরে আন্দোলনে বসেছেন ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা। ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের চাকরির দাবিকে ‘অন্যায্য’ বলেছেন তাঁরা। বিরোধীরা অবশ্য এর নেপথ্যে রাজ্য সরকারেরই ‘হাত’ দেখছে। তারা দাবি করেছে, চাকরিপ্রার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই বাধিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিশদে কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। শুধু বলেছেন, ‘‘আমি তো বুঝলাম না কিছু! প্রশ্নটা বিরোধীদের গিয়েই করো না।’’

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে ২৬৯ জনের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগ উঠেছিল, তাঁরা বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন। সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে এখনই চাকরি যাচ্ছে না ‘ব্যতিক্রমী ভাবে’ নিযুক্ত ২৬৯ জনের। বিরোধী সিপিএম, বিজেপি ওই রায়কে তেমন গুরুত্ব দিতে চায়নি। সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, বাস্তব ক্ষেত্রে ওই রায়ের কার্যকারিতা নেই। কিন্তু রাজ্য একে ‘নৈতিক জয়’ হিসাবেই দেখেছে। বৃহস্পতিবার মমতাও জানিয়েছেন, তিনি খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘কোর্টে কেস চলছে। কোর্টের অর্ডারকেও সম্মান দিচ্ছি। তাই কিছু বলছি না। আমি তো চাই, কারও চাকরি যেন না যায়। সকলের চাকরি থাকুক। আমি খুশি যে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee TET Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE