গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আগে দিল্লি সামলান, তার পর এ রাজ্যের কথা ভাববেন। ঠাকুরনগর ও দুর্গাপুর থেকে মোদীর আক্রমণের পর এ ভাবেই পাল্টা জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাংলা পথ দেখাচ্ছে বলেই ওঁর এত রাগ।” বাংলা থেকে তৃণমূল উচ্ছেদ অনেক দূরের ব্যাপার, দিল্লি থেকে বিজেপির উচ্ছেদের জোরদার ব্যবস্থা যে শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মমতা।
শনিবার মমতা এবিপি আনন্দকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাত্কারে বলেন, “বিজেপি একটা দাঙ্গাবাজের দল। ওদের চোখে-মুখে রক্তের দাগ লেগে রয়েছে। এদের দেখে লজ্জা হয়। ঘৃণা হয়।” মোদীর যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও যোগ্যতাই নেই সে কথাও বলেন তিনি। ব্রিগেডের সভায় তিনি সব বিরোধী দলকে এক ছাতার তলায় এনেছেন। একটি পরিবার তৈরি করেছেন। কিন্তু মোদীর কি কোনও পরিবার আছে? কোনও রাজনৈতিক কেরিয়ার আছে? কটাক্ষ করেন মমতা।
মোদীকে ‘দুর্নীতির ঠাকুরদাদা’ বলেও আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। সিবিআই দিয়ে বার বার ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু সারদা-নারদ নিয়ে যে কিছু প্রমাণ করতে পারবে না সেই চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন মমতা। বলেন, “উনি একটা দানবীয় প্রধানমন্ত্রী। সব গিলে খাচ্ছেন এক এক করে।” কিন্তু দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। এ ভাবে চলবে না। মোদীর ঔদ্ধত্যকে যে দেশের মানুষ মেনে নেবে না সেটাও জানান তৃণমুল নেত্রী।
আরও পড়ুন: হিংসার আশ্রয়ে দিদি: ঠাকুরনগর থেকে আক্রমণে মোদী, বাংলা থেকেই বাজালেন ভোটের দামামা
দুর্গাপুরের সভায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে সিন্ডিকেট নিয়ে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ রাজ্যে সিন্ডিকেট রাজ চলছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে সব ঘুচিয়ে দেবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। রাজ্যে তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স চালাচ্ছে বলেও কটাক্ষ করেন মোদী। এ প্রসঙ্গ আসতেই মমতার পাল্টা জবাব, “তাঁর বিরুদ্ধে সিন্ডেকেটের অভিযোগ তোলার উনি কে? নিজেই তো সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন জিএসটি নিয়ে। আর সেই সিন্ডিকেটের নেতা উনি।” পাশাপাশি মমতা এটাও বলেন, “সিন্ডিকেট তো ভাল অর্থে ব্যবহৃত হয়। মনে রাখবেন সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কও আছে।”
আরও পড়ুন: সিবিআই প্রশ্নে মমতাকে তীব্র কটাক্ষ করে মোদী বললেন, তৃণমূলের বিদায় নিশ্চিত
আরও পড়ুন: ভয় না পেলে সিবিআইকে আটকাচ্ছেন কেন, দুর্গাপুরে মমতাকে তোপ মোদীর
পশ্চিমবঙ্গে আষুষ্মান ভারত চলতে দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার। যদি সেই প্রকল্প চলে তা হলে মোদীর স্তুতি গাইবে বাংলা মানুষ। দুর্গাপুরের সভা থেকে এ ভাবেই আয়ুষ্মান ভারত নিয়ে মমতাকে নিশানা করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন মমতা। তৃণমূল সরকার বিনামূল্যে চিকিত্সা পরিষেবা দিচ্ছে। কিন্তু মোদীর সরকার তা দিচ্ছে না বলে পাল্টা আক্রমণ করেন তিনি। গুজরাতের দাঙ্গার প্রসঙ্গ তুলেও মোদীকে তুলোধোনা করেন তৃণমূল নেত্রী। এনআরসির নামে বিজেপি হিন্দু-মুসলিমদের খেদানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। বলেন, “কোথাও বিহারি খেদাও, কোথাও বাঙালি খেদাওয়ের অভিযান চালাচ্ছে ওরা। এটা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।” দিল্লি থেকে মোদীকে খেদানোই হবে যে তাঁর প্রথম কাজ স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা। আর সে কাজ ব্রিগেড সমাবেশ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য তাঁর।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরজানতে পড়ুন আমাদেররাজ্যবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy