ভোটের আগে ‘গুজবের রাজনীতি’ চলছে বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সব গুজব, গোলমালের নেপথ্যে বিজেপি রয়েছে বলে শুক্রবার সরাসরি আক্রমণ করলেন মমতা।
পুলওয়ামা-কাণ্ডের পরে যে ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষকে দেশপ্রেমের নামে হুমকি, মারধর করা হচ্ছে, একের পর এক গোলমালের ঘটনা ঘটছে, তা বিজেপি-আরএসএস-এর ‘নির্বাচনী ভাঁওতা’ বলে শুক্রবার মমতা দাবি করেন। তারকেশ্বরে সরকারি পরিষেবা প্রদানের মঞ্চে মমতা সরাসরিই বলেন, ‘‘আমি সরকার চালাই। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, বিজেপি-আরএসএস নিজেরাই ১০টি বোরখা কিনেছে। লোকদের বোরখা পরিয়ে রাস্তায় ছেড়ে দিচ্ছে। নিজেরাই হঠাৎ করে ডান্ডা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছে। আর গুজব রটাচ্ছে ছেলে চুরি করতে এসেছে। নিজেরাই তখন একে অপরকে মারছে।’’ অভিযোগ নস্যাৎ করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে মনে হচ্ছে, উনি এতই ভীত যে বাক্-সংযম হারিয়েছেন। উনিই তো পুলিশমন্ত্রী। এখনও এক জনকেও গ্রেফতার করতে পেরেছেন?’’
এই সব গুজবের জেরে রাজ্য-সহ দেশের নানা প্রান্তে যে সব গোলমালের ঘটনা ঘটছে, তাতে বিজেপির মতো ‘ধর্মান্ধ’দের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুরোটাই রাজনীতির ভাঁওতা। নির্বাচনী ভাঁওতা। ভোটের আগে গুজবের রাজনীতি। এরা সব ভোটের আগে বসন্তের কোকিল। ভোট চলে গেলে আর এদের পাবেন না।’’ এমনকি, লোকসভা ভোটের আগে জওয়ানদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকার রাজনীতি করছে বলে মমতার অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘সঠিক সময়ে ব্যবস্থা হলে ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যু হত না! পুরোটাই অপপ্রচার চলছে।’’ বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্রর পাল্টা জবাব, ‘‘সকলে যেন মনে রাখেন, কালচক্রের নিয়মে আজ আমরা ক্ষমতায়, কাল অন্য কেউ থাকবেন। কিন্তু দেশের সঙ্গে কেউ যেন ছিনিমিনি না খেলেন, রাজনীতি না করেন।’’
কাশ্মীরি-সহ বিভিন্ন ধর্ম, সম্প্রদায়ের মানুষের উপর যে হামলা চলছে, তা ঐক্যবদ্ধভাবে রোখার জন্য আগেই আবেদন জানিয়েছেন মমতা। এ দিনও একই আর্তি জানিয়ে রাজ্যবাসীকে তাঁর পরামর্শ, ‘‘যা ঘটছে, তার দিকে কড়া নজর রাখুন। কিছু ঘটতে দেখলেই পুলিশে খবর দেবেন। আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না।’’ কোনও ভাবেই এ রাজ্যে যাতে দাঙ্গা-পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন মানুষের কাছে তাঁর আশ্বাস, ‘‘মানুষের কল্যাণের জন্য যা করার সব করব। কিন্তু কোনও ভাবেই ভেদাভেদ, দাঙ্গা লাগাতে দেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy