তফসিলি জাতি ও জনজাতি শংসাপত্র নিয়ে হয়রানি এড়াতে কঠোর অবস্থান নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলির বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে এ নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, নির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা এই বৈঠকে বাম বিধায়কেরা যোগ দিলেও অধিবেশন চলাকালীন বিধানসভায় এই বৈঠক ডাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম।
তফসিলি জাতি ও জনজাতি মানুষের সমস্যা জানতে সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত সব দলের বিধায়কদের কাছেই তিনি জানতে চান, এই এলাকাগুলিতে ঠিক কী কী অসুবিধা রয়েছে। শুধু বিরোধীরাই নয়, শাসক দলের একাধিক বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীকে তফসিলি শংসাপত্র নিয়ে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ করেন। নদিয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমীর পোদ্দার বৈঠকে জানান, বাবার তফসিলি শংসাপত্র থাকা সত্ত্বে সন্তানের জন্য আলাদা করে বিভিন্ন প্রমাণপত্র দেখতে চাওয়া হচ্ছে। তাতেই জটিলতা তৈরি হচ্ছে। সরকার ও বিরোধী পক্ষের আরও একাধিক বিধায়কও একই অভিযোগ করেন। তা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত আধিকারিকদের বিষয়টি দেখতে বলেন।
শুধু তা-ই নয়, শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি। প্রয়োজনে ব্লক স্তরে শিবির করে এই শংসাপত্র বিলির ব্যবস্থা করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা চা-শ্রমিকদের দুর্দশা তুলে ধরে তাঁদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকাঠামো উন্নতির দাবি জানান।
কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা এ দিনের বৈঠকে তফসিলি জাতি বা জনজাতিদের জন্য সরকারি অনুদান সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানান। সরকারি তরফে ঘোষতি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেতে সমস্যার কথা উল্লেখ করেন তাঁরা। একই অভিযোগ করেন বাগদার বিধায়ক দুলাল বর। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা দলিতদের উপরে নিগ্রহের অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে এই অংশের মানুষের উপরেও হামলা হচ্ছে। এই অংশের সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে বাম বিধায়কেরা যোগ দিলেও বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিধানসভার অধিবেশন চলছে। অধিবেশন চলাকালীন বিধানসভার মধ্যেই এমন বৈঠক এ রাজ্যে নজিরবিহীন। এতে বিধানসভার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হল। অধিবেশনের বিরতিতে বা মুলতুবি হওয়ার পরে বৈঠক করা যেত।’’ স্পিকার এমন বৈঠকের সম্মতি দিয়েছেন কি না, সুজনবাবু সেই প্রশ্ন তুললেও স্পিকার অবশ্য এর মধ্যে অন্যায় কিছু দেখছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy