প্রতি সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান থাকার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাওড়ার মঙ্গলাহাটের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তাই এ বার তাঁরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং অরাজনৈতিক সংগঠনগুলির নবান্ন অভিযানের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিলেন। নবান্ন অভিযানের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার হাওড়া থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পরে মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা জানান, তাঁদের আইনজীবী আজ, বুধবারই কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করবেন।
মঙ্গলাহাটের বস্ত্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুজোর আগে চলতি মাসে নবান্ন অভিযানের জেরে পর পর দু’সপ্তাহ হাট বসতে পারেনি। গত ৮ জুলাই, মঙ্গলবার এবং ১৪ জুলাই, সোমবার কয়েকটি অরাজনৈতিক সংগঠনের নবান্ন অভিযান ছিল। তার জেরে হাওড়া ময়দানে এসে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। অন্য দিকে, ২১ জুলাইয়ের জনসমাবেশের কারণেও ব্যবসা ঠিক মতো জমেনি। ব্যবসায়ীদের দাবি, সব মিলিয়ে চলতি মাসে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এরই মধ্যে ফের আগামী ২৮ জুলাই, সোমবার অন্য একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযান হওয়ার কথা রয়েছে। পুজোর আগে আবার সে দিনও হাট না বসতে পারলে কয়েক কোটি টাকার লোকসান হবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাই এ বার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
হাট ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, এশিয়ার বৃহত্তম এবং প্রায় ৭০ বছরের পুরনো মঙ্গলাহাটের সঙ্গে বিভিন্ন জেলা তো বটেই, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা প্রায় সাত লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। কিন্তু বার বার ব্যবসা মার খাওয়ায় তাঁরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তাই সোম ও মঙ্গলবার হাওড়ায় নবান্ন অভিযান করার বিরুদ্ধে এ দিন সরব হন ব্যবসায়ীরা। দাবি তোলেন, মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ায় অবিলম্বে প্রতি সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান বন্ধ করতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে ওই দু’দিন হাটে বসতে পারেন, সে বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই প্রসঙ্গে মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মলয় দত্ত ও সম্পাদক রাজকুমার সাহা বলেন, ‘‘যাঁরা নবান্ন অভিযান করছেন, তাঁদের আন্দোলনের প্রতিআমাদের সহমর্মিতা রয়েছে। আমরা তাঁদের আন্দোলন বন্ধ করতে বলছি না। কিন্তু এ ভাবে আমাদের কয়েক লক্ষ ব্যবসায়ীকে ভাতে মেরে আন্দোলন বা নবান্ন অভিযান হচ্ছে বলেই আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হচ্ছি।’’
এই বিষয়ে এ দিন হাওড়া থানায় স্মারকলিপি জমা দেন মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা। এই প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের কাছেব্যবসায়ীরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তবে ওঁরা যদি এ নিয়ে আদালতে যেতে চান, যেতেই পারেন। তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে, সোম বা মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান থাকলে নিরাপত্তার জন্য হাট বন্ধ রাখতেই হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)