মানিক ভট্টাচার্য। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির দায় পুরোপুরি নিজের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইলেন মানিক ভট্টাচার্য। বিধায়কের জামিন চেয়ে তাঁর আইনজীবী বললেন, ‘‘দুর্নীতি যে পর্ষদেই হয়েছে তার প্রমাণ কী? জেলায় জেলায় যে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ রয়েছে তারাও তো অনিয়ম করতে পারে! তাঁর মক্কেলের নাম করে কেউ টাকা নিয়েছে মানেই কি তিনি একজন অপরাধী?’’ মানিকের আইনজীবীর এই যুক্তি শোনার পর কলকাতা হাই কোর্টও বৃহস্পতিবার পাল্টা প্রশ্ন করেছে ইডিকে।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে শুনানি ছিল মামলাটির। বিচারপতি ঘোষই এর আগে নিয়োগ মামলায় মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে জামিন দিয়েছিলেন। তার পরে মানিক এবং তাঁর পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের জামিনের মামলাও রুজু হয় তাঁরই এজলাসে। বৃহস্পতিবার মানিকের জামিনের মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি ঘোষের এজলাসে। তাঁকে মানিকের আইনজীবী বলেন, ‘‘নিয়োগের জন্য প্যানেল তৈরি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলিকে পাঠিয়ে দেয় পর্ষদ। এমনও তো হতে পারে পর্ষদের তরফ থেকে যে তালিকা পাঠানো হত সেই অনুযায়ী নিয়োগপত্র দেয়নি সংসদ। বদলে অন্য কাউকে নিয়োগের শংসাপত্র দিয়ে থাকতে পারে তারা। ফলে যদি নিয়োগে অনিয়ম হয়ে থাকে তা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের মাধ্যমেও হয়ে থাকতে পারে।’’
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি অবশ্য শুধু দায় ঠেলেই বিরত হননি। তাঁর আইনজীবী এর পরে আদালতকে পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতিতে আমার মক্কেলের নাম কেউ নিতে পারেন বা নাম করে টাকা নিতে পারেন। কিন্তু সেই কারণে কি তাঁকেই দায়ী করা যায়?’’ মানিকের আইনজীবীর এই যুক্তি শোনার পর ইডির কাছে জবাব চান বিচারপতি ঘোষ। তবে তার আগে প্রশ্ন করেন মানিকের আইনজীবীকেও।
বিচারপতি ঘোষ— পর্ষদ অনুমতি না দিলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ নিয়োগ করবে কী ভাবে?
মানিকের আইনজীবী— জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ যদি কোনও বেআইনি কাজ করে থাকে তা হলে তার দায় পর্ষদের উপরেই বা বর্তাবে কেন?
ইডির আইনজীবী— মানিক এবং তাঁর পুত্রের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতে অস্বীকার করছে ব্যাঙ্ক। চার বার ওই তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর ফলে তদন্ত সঠিক পথে এগোতে পারছে না।
বিচারপতি ঘোষ— (ইডির আইনজীবীর উদ্দেশে) তদন্তে অগ্রগতি প্রয়োজন, তদন্তে কোনও অগ্রগতি না হলে অনন্তকালের জন্য কাউকে জেলে রেখে দেওয়া যায় না।
তবে এর পর আর ওই মামলা এগোয়নি। বিকেল ৪টেয় আবার ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy