Advertisement
E-Paper

হোমের চেয়ে রাস্তাই ভাল, বললেন চেল্লুর

নানা ধরনের দুর্নীতি ও অপকর্ম এবং পরিকাঠামোর দুরবস্থার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন হোম ইদানীং প্রায়ই শিরোনামে আসছে। হোমগুলির দুর্দশার ছবিটি শুক্রবার এক মন্তব্যে পরিষ্কার করে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের হোমগুলির অবস্থা এতটাই সঙ্গিন যে, সেখানে থাকার চেয়ে রাস্তায় থাকা অনেক নিরাপদ।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৩:২০

নানা ধরনের দুর্নীতি ও অপকর্ম এবং পরিকাঠামোর দুরবস্থার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন হোম ইদানীং প্রায়ই শিরোনামে আসছে। হোমগুলির দুর্দশার ছবিটি শুক্রবার এক মন্তব্যে পরিষ্কার করে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের হোমগুলির অবস্থা এতটাই সঙ্গিন যে, সেখানে থাকার চেয়ে রাস্তায় থাকা অনেক নিরাপদ।’’

বারাসতের কিশলয় হোমের পরিস্থিতি নিয়ে জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। একই সঙ্গে তাঁর পর্যবেক্ষণ, এ রাজ্যের বেশির ভাগ হোম পুরুষ বা মহিলা কারও জন্যই নিরাপদ নয়।

রেল পুলিশ ২০১১ সালে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ২২ জন নাবালককে উদ্ধার করে। রেল পুলিশের অভিযোগ, দু’টি লোক ওই নাবালকদের পাচার করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। পাচারের চেষ্টার অভিযোগে তাদের গ্রেফতারও করা হয়। জনস্বার্থ মামলার আবেদনকারী আদালতে জানান, রেল পুলিশ নাবালকদের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি বা শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে তাদের তুলে দেয়। কমিটি তাদের পাঠায় কিশলয় হোমে। বছর দেড়েক পরে ওই হোমে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা সেখানে নেই। কী হল তাদের? কোথায় গেল তারা?

আবেদনকারী জানান, তথ্য জানার অধিকার আইন-বলে সবিস্তার খোঁজখবর করে জানা যায়, শিশু কল্যাণ কমিটি তাদের অভিভাবকদের কাছে নাবালকদের ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ফিরিয়ে দেওয়ার সময় নিয়মবিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। আদালতে জানানো হয়, অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার সময় পাঁচ সদস্যের কমিটির অনুমোদন ছিল না। কমিটির এক সদস্যের অনুমতি নিয়েই নাবালকদের হোম থেকে যেতে দেওয়া হয়েছে। কী কারণে পাঁচ সদস্যের অনুমোদন নেওয়া হল না, মামলার আবেদনে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

আবেদনকারীর আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ শুনে ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন হোমে মেয়েরাই কেবল নিরাপদ নয়। ছেলেরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তাদের উপরেও যৌন নিপীড়ন করা হয়।’’

রাজ্য সরকার যে ভবঘুরে নাবালক-নাবালিকাদের বিষয়ে উদাসীন, এ দিন পরোক্ষ ভাবে সেই অভিযোগও করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘সল্টলেকে জুভেনাইল অ্যাকাডেমি ১০ বছর ধরে তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। বিচারপতিরাও সেখানে গিয়ে রাজ্যের অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে ওই অ্যাকাডেমিতে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।’’ শুধু জুভেনা‌ইল অ্যাকাডেমি নয়, রাজ্যের বিভিন্ন আদালতের পরিকাঠামোর অভাব নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। বলেন, ‘‘আদালতগুলির হাল নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের সঙ্গে তিন মাস আগে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও কাজ শুরু হয়নি।’’ কাজের অগ্রাধিকারের বিষয়টিকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।

রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তকে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, কিশলয় তো বটেই, সেই সঙ্গে রাজ্যের অন্য হোমগুলির পরিস্থিতি নিয়ে অবিলম্বে হলফনামা জমা দিতে হবে।

Manjula chellur kolkata high court road home police child
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy