Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশ হেফাজতে সাবেক ইডি-কর্তা

কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশের দায়ের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করেনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ৭ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্কশাল আদালতে আত্মসমর্পণ করেও বুধবার জামিন পেলেন না শুল্ক অফিসার মনোজ কুমার।

আত্মসমর্পণ: বুধবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মনোজ কুমার। নিজস্ব চিত্র

আত্মসমর্পণ: বুধবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মনোজ কুমার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশের দায়ের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করেনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ৭ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্কশাল আদালতে আত্মসমর্পণ করেও বুধবার জামিন পেলেন না শুল্ক অফিসার মনোজ কুমার। এ দিন ব্যাঙ্কশালের বিশেষ আদালতের বিচারক দেবব্রত সিংহ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর প্রাক্তন এই তদন্তকারী অফিসারকে ১২ মে পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মনোজের বিরুদ্ধে তোলাবাজির সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ এনে মামলা করেছে কলকাতা পুলিশ।

এর আগে ২২ মার্চ কলকাতা হাইকোর্ট মনোজের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান মনোজ। সুপ্রিম কোর্ট ২৭ এপ্রিল সেই আবেদন খারিজ করে মনোজকে নির্দেশ দেয়, ৭ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্কশালের বিশেষ আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করতে হবে। সেই মতো এ দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সঙ্গে জামিনের আর্জিও জানান। তাঁর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি ও রাজদীপ বিশ্বাস আদালতে জানান, তাঁদের মক্কেল সারদা গোষ্ঠীর পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত করছিলেন। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত, তা মনোজের তদন্তেই জানা গিয়েছে। সেই রাজনৈতিক ব্যক্তিরা প্রভাব খাটিয়ে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।

সরকারি আইনজীবী তরুণ চট্টোপাধ্যায় মনোজের জামিনের বিরোধিতা করে জানান, অভিযুক্তকে বার বার নোটিস পাঠানো সত্ত্বেও তিনি আগে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের সামনে হাজিরা দেননি। যখন হাজির হয়েছেন, তখনও তদন্তে সহযোগিতা করেননি। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসার হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা আদায় করেছেন। কলকাতা পুলিশের অভিযোগ, প্রদীপ হীরাবট নামে এক যুবক মনোজের হয়ে তোলা আদায় করতেন। আইনজীবী জানান, মনোজকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আরও অনেক সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে হবে।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেক্সপিয়র সরণি থানায় প্রদীপের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কমল সোমানি নামে এক চার্টার্ড অ্যাকাউট্যান্ট। তিনি অভিযোগ করেন— প্রদীপ তাঁর কাছে ৭৫ লক্ষ টাকা তোলা চেয়ে হুমকি দেন, টাকা না পেলে কমলকে অবৈধ ভাবে টাকা পাচারের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। পুলিশের দাবি, এই ঘটনার তদন্তে নেমেই মনোজের নাম জানা যায়। পুলিশের অভিযোগ, প্রদীপ-সহ আরও কয়েক জনকে নিয়ে তোলাবাজির সিন্ডিকেট চালাতেন কেন্দ্রীয় এই অফিসার। টাকা না দিলে টাকা পাচারের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিতেন। পুলিশের দাবি, তোলার টাকা এক বাল্যবন্ধু ও নিজের শ্যালকের অ্যাকাউন্টে রাখতেন তিনি।

ইডি-তে থাকাকালীন রোজ ভ্যালি কাণ্ডের তদন্তের সময়ে ওই সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও এনেছে কলকাতা পুলিশ। ইডি-র উচ্চপদস্থ কর্তারা তদন্ত করে মনোজকে তাঁর মূল বিভাগ শুল্ক দফতরে সরিয়ে দেন। তার আগে তাঁকে সাসপেন্ডও করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manoj KUmar ED Enforcement Directorate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE