Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Schools

স্কুলে কম্পিউটার নেই, নম্বর পাঠাতে হয়রানি

রাজ্য সরকারের নির্দেশে অনেক প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই শুক্রবার পর্যন্ত এ ভাবে বাংলা শিক্ষা পোর্টালে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের নম্বর আপলোড করতে হয়েছে।

শুক্রবার ছিল এই নম্বর আপলোড করার শেষ দিন।

শুক্রবার ছিল এই নম্বর আপলোড করার শেষ দিন। প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:২৯
Share: Save:

হাত আছে, হাতিয়ার নেই। এ ক্ষেত্রে হাতিয়ার মানে কম্পিউটার। অনেক স্কুলেই কম্পিউটার না-থাকায় স্কুলের কাজের সময়ে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছুটতে হচ্ছে সাইবার ক্যাফেতে। তাঁদের কেউ কেউ স্কুলে ঢুকেই ঘাড় গুঁজেছেন মোবাইলে। না, মোবাইলে অতি আসক্তির কারণে নয়, ছাত্রছাত্রীদের নম্বর সময়সীমার মধ্যে আপলোড করার তাগিদে।

রাজ্য সরকারের নির্দেশে অনেক প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই শুক্রবার পর্যন্ত এ ভাবে বাংলা শিক্ষা পোর্টালে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের নম্বর আপলোড করতে হয়েছে। শুক্রবার ছিল এই নম্বর আপলোড করার শেষ দিন। সেই সময়সীমা যদি বাড়ানোও হয়, সমস্যার বিশেষ সুরাহা হবে না বলে জানাচ্ছে শিক্ষক শিবির। তাদের অভিযোগ, পোর্টালে নম্বর তোলার ন্যূনতম সরঞ্জাম হল কম্পিউটার, কিন্তু বেশ কিছু স্কুলে সেটাই নেই। শিক্ষকদের অভিযোগ, পরিকাঠামো ও প্রশিক্ষণ না-থাকায় নিজেদের মোবাইল থেকে বা সাইবার ক্যাফের শরণ নিয়ে নম্বর আপলোড করতে গিয়ে তাঁদের দিশাহারা অবস্থা।

হাওড়ার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই জানান, তাঁর বিদ্যায়তনে ৬২ জন পড়ুয়ার জন্য দু’জন শিক্ষক। তাঁদের এক জন সারা দিন সাইবার ক্যাফেতে বসে থেকেও সকলের নম্বর পোর্টালে আপলোড করতে পারছেন না। পিন্টু বলেন, ‘‘কোনও রকম পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষণ ছাড়া এই ধরনের নির্দেশ আসায় খুবই অসহায় অবস্থা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের।’’

বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হন্ডা বলেন, ‘‘মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে ভর্তির সময় ডেভেলপমেন্ট ফি হিসেবে ২৪০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু প্রাথমিকে নেওয়া হয় না। শিক্ষা দফতরের দেওয়া এককালীন ‘কম্পোজিট ফান্ড’ থেকেই সব খরচ করতে হয়। সেই টাকায় সব কিছু সম্ভব নয়।’’ ওই শিক্ষক-নেতার প্রশ্ন, তাঁদের স্কুলের সকলের নম্বর আপলোড এবং মার্কশিট ডাউনলোড করতে প্রায় ছ’হাজার টাকা খরচ। এই টাকা কোথা থেকে আসবে?

উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষকদের জোর করে অনৈতিক ভাবে নম্বর আপলোড করতে বলা হচ্ছে। এই বিষয়ে কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তিই নেই।’’

এক শিক্ষাকর্তার দাবি, প্রাথমিক স্কুলে না-থাকলেও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের তথ্য-মিত্র কেন্দ্রে কম্পিউটার আছে। তা ব্যবহার করা যেতে পারে। শিক্ষকদের পাল্টা অভিযোগ, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অধীনে ৭০-৮০টি প্রাথমিক স্কুল। এত স্কুলের শিক্ষক এক জায়গায় এসে কী ভাবে কাজ করবেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Computers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE