Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
State News

ভাঙড়ের পথ আটকে ধরপাকড়, তবু আটকানো গেল না অলীকের সভা

জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, ওই ১১ জন অসমের একটি পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। এ দিন সকালেই তাঁদের ভাঙড় যাওয়ার কথা ছিল। গত রাতে তাঁরা বেলঘরিয়ায় একটি ফ্ল্যাটে ছিলেন।

তপোবনের মাঠে ভাষণ দিচ্ছেন অলীক।—নিজস্ব চিত্র।

তপোবনের মাঠে ভাষণ দিচ্ছেন অলীক।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ১৩:৩৩
Share: Save:

ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী সমাবেশে যাওয়ার আগেই নানা জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হল বহু জনকে। ভাঙড়ের আশপাশেও রাস্তা আটকে আন্দোলনের সমর্থকদের অনেককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে জমি কমিটির অভিযোগ। তবে শেষ পর্যন্ত গ্রিড সংলগ্ন তপোবনের মাঠে সভাই শুধু হল না, সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিলেন জমি কমিটির নেতা, পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ অলীক চক্রবর্তীও।
অলীক-সহ অন্যান্য বক্তাদের অভিযোগ, চার পাশ থেকে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করে আন্দোলন ভাঙতে চাইছে পুলিশ এবং তৃণমূল। একই সঙ্গে অলীকের চ্যালেঞ্জ— “এ সব করেও আন্দোলন ভাঙা যাবে না। এত বাধা সত্ত্বেও আজ যে সংখ্যায় মানুষ জমায়েত হয়েছেন এখানে, তাতে সরকারের বোঝা উচিত, ভয় পেয়ে পালিয়ে যাবে না ভাঙড়।” আন্দোলকারীদের তরফে মির্জা হাসান বলেন, ‘‘শাসক দল আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ভেস্তে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। বোমা-বন্দুক নিয়ে সন্ত্রাস করতে চাইছে।’’
যদিও জমি কমিটির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের পাল্টা দাবি, “বহিরাগতরা এসে দিয়ে জোর করে উন্নয়ন আটকানোর চেষ্টা করছে। যাঁদের জমি তাঁরা অনেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব মেনে নিতে তৈরি রয়েছেন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন।”

আরও পড়ুন
জমি কমিটির সমাবেশ ঘিরে তরজা
পাওয়ার গ্রিড নিয়ে আরাবুল বিনে গীত নেই

গত কয়েক দিন ধরেই, আজকের সভা বানচাল করতে লাগাতার বোমা, গুলি নিয়ে আরাবুলের বাহিনী হামলা চালাচ্ছে বলে জমি কমিটির অভিযোগ। কিন্তু এই অভিযোগও মানতে নারাজ আরাবুল।
এই ‘লাগাতার হামলা’র বিরুদ্ধেই, ‘ভাঙড় চলো’ স্লোগানে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে সভার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। ভাঙড়ের বাইরে থেকেও এই আন্দোলনের কর্মী, সমর্থকদের আসার কথা ছিল সেখানে। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে খবর হতে শুরু করে পুলিশী ধরপাকড়।


সমাবেশে হাজির আন্দোলনকারীরা।—নিজস্ব চিত্র।

এই সমাবেশে যোগ দিতে বুধবার অসম থেকে আসা ১১ জনকে সাতসকালেই বেলঘরিয়া থেকে গ্রেফতার করে স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। পরে বাগুইআটি থানা এলাকার চিনার পার্ক থেকে ধরা হয় আরও জনা পঞ্চাশেক আন্দোলনকারীকে। এঁরা ভাঙড়ের সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।
জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, অসম থেকে আসা ওই ১১ জন অসমের একটি পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। এ দিন সকালেই তাঁদের ভাঙড় যাওয়ার কথা ছিল। গত রাতে তাঁরা বেলঘরিয়ায় একটি ফ্ল্যাটে ছিলেন। কিন্তু, এ দিন ভোরে তাঁদের প্রত্যেককেই গ্রেফতার করে বেলঘরিয়া থানায় তুলে নিয়ে যায় এসটিএফ। একই সঙ্গে রাজু সিংহ নামে সিপিআইএমএল রেড স্টারের এক সদস্যকেও গ্রেফতার করেছে তারা।

সমাবেশে যোগদানের পথে চিনারপার্কে আটক করা হল ভাঙড় আন্দোলনের কর্মী, সমর্থকদের। —নিজস্ব চিত্র।

কমিটির সদস্য অমিতাভ ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলনকে সমর্থন করতে অসম থেকে ওঁরা এসেছিলেন। তাঁদের এ ভাবে কোনও কারণ ছাড়া কেন গ্রেফতার করা হল, বুঝতে পারছি না। পুলিশের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। এ রাজ্যে কি রাজনীতি করার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে?’’
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দাপ্রধান ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, “অসম থেকে আসা সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কী উদ্দেশ্যে তাঁরা এসেছিলেন, কোথায়ই বা যাচ্ছিলেন তা খতিয়ে দেখছি আমরা।”

এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন

তবে, এ দিন বিকেলেই আটক সকল আন্দোলনকারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্য দিকে, অসমের ওই ১১ জন-সহ বেলঘরিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া মোট ১২ জনকে এ দিন সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত বন্ডে ছাড়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE