মুক্তির পর গৌর চক্রবর্তী। নগর দায়রা আদালতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
সাত বছর জেল খাটার পর ইউএপিএ থেকে মুক্তি পেলেন মাওবাদীদের এক সময়ের মুখপাত্র গৌর চক্রবর্তী।
মাওবাদীদের ছাপানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনেক সময়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দিতেন। লালগড় এলাকার কাঁটাপাহাড়িতে মাওবাদীদের প্রথম প্রকাশ্য সভায় বক্তাও ছিলেন তিনি। কিন্তু গৌর চক্রবর্তী বলতেন, ‘‘আমি পার্টির কেউ নই। ওঁরা আমাকে মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ করেছেন।’’ তবে পুলিশের দাবি, গৌরবাবু মাওবাদী সংগঠনেরই সদস্য। সেই অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ-তে তিনিই প্রথম ধৃত।
তথ্যপ্রমাণের অভাবে মঙ্গলবার কলকাতা নগর দায়রা আদালত গৌরবাবুকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। তাঁর আইনজীবী শুভাশিস রায় জানান— নগর দায়রা আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক (২) কুমকুম সিংহ তাঁর রায়ে বলেছেন, কোনও সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার আগে কেউ সেই সংগঠনের সদস্য হয়ে থাকলে তাঁকে ইউএপিএ-তে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। প্রসঙ্গত, সিপিআই (মাওবাদী) নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার আগেই গৌরবাবু তার সঙ্গে যুক্ত হন। শুভাশিসবাবুর বক্তব্য— আদালত জানিয়ে দিয়েছে, গৌরবাবুর সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়া এবং তাঁকে গ্রেফতারের মধ্যবর্তী পর্যায়ে এমন কোনও অঘটন ঘটেনি, যার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে বা দোষী সাব্যস্ত করা যাবে। এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী জানান, গৌরবাবুর বিরুদ্ধে তদন্তকারীরা যে সব তথ্যপ্রমাণ আদালতে দাখিল করেছিলেন, আদালত তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি।
২০০৯ সালের ২২ জুন এই রাজ্যে সিপিআই (মাওবাদী)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তার পরের দিনই পার্ক স্ট্রিটে একটি টিভি চ্যানেলের অফিস থেকে গৌরবাবুকে গ্রেফতার করে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। লালবাজারের এক কর্তা জানান, যে ১৭ জনকে গৌরবাবুর বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষী করা হয়, প্রাক্তন মুখ্যসচিব অর্ধেন্দু সেন তাঁদের অন্যতম।
আদালতের রায় শুনে গৌরবাবুর স্ত্রী মুক্তাদেবী বলেন, ‘‘আমরা জানতাম উনি নির্দোষ, মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ ওঁকে ফাঁসিয়েছিল।’’ রায় ঘোষণার পর এ দিন গৌরবাবুর সমর্থনে আদালত চত্বরে স্লোগান দেওয়া ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy