কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে মাওবাদী উপদ্রুত তালিকা থেকে রাজ্যের কিছু অঞ্চলকে বাদ দেওয়া ও বাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে এক প্রশাসনিক বৈঠকে সিআরপি-র এক কর্তা দাবি করলেন, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে রাজ্যের সীমানার জঙ্গলমহলে মাওবাদী সক্রিয়তা বা়ড়ার খবর মিলেছে। তবে রাজ্যে সিআরপি-র বাহিনী বাড়়ার সম্ভাবনা নেই।
দুর্গাপুরে এ দিন ডিআইজি (সিআরপি) অনিলকুমার চতুর্বেদী, রাজ্য পুলিশের ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) ডিপি সিংহ, আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) রাজীব মিশ্র এবং জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলার পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সিআরপি-কর্তা অনিলবাবু বলেন, ‘‘সীমানা এলাকায় মাওবাদী সক্রিয়তা বৃদ্ধির খবর মিললেও জঙ্গলমহলের পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। এই মুহূর্তে রাজ্যে সিআরপি বাহিনীর সংখ্যা বাড়ছে না। এখনই বাড়ানো হবে, তেমন কোনও সম্ভাবনারও খবর নেই।’’
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বীরভূমের একটি অংশকে মাওবাদী অধ্যুষিত জেলার তালিকা থেকে আগেই বাদ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কয়েক মাস আগে ‘এসআরই’ (‘সিকিওরিটি রিলেটেড এক্সপেন্ডিচার’ বা মাওবাদী সমস্যা মোকাবিলার জন্য গৃহীত কর্মসূচির অধীনে থাকা জেলা) জেলার তালিকা থেকেও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু ঝাড়গ্রাম জেলা রয়েছে এই তালিকায়। রাজ্য এই বিষয়ে আপত্তি তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছিল, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াকে আরও অন্তত এক বছর এসআরই-তালিকায় রাখা হোক। কিন্তু সেই আবেদনে কাজ হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন বীরভূমের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া ও ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর।
সিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁও মামলায় দেশের পাঁচ জন মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতারের পরে মাওবাদীদের উপস্থিতি রয়েছে, এমন রাজ্যগুলিকে বিশেষ সতর্কতার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বৈঠকে যোগ দেওয়া রাজ্য পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘মাওবাদী তৎপরতা রুখতে কী ভাবে এগনো হচ্ছে, কোথাও খামতি রয়েছে কি না, সে সব নিয়ে আলোচনার জন্য মাঝেসাঝে এমন ‘রিভিউ মিটিং’ হয়। এটা রুটিন।’’