Advertisement
E-Paper

দিনমজুরির পথ থেকে ফিরে সফল নাসির

৯২% নম্বর পেয়েও নাসির জানেন না, ভবিষ্যৎ কোন দিকে গড়াবে। আরও যে পড়াশোনা করবে, তার টাকা কোথায় পাবেন? দুশ্চিন্তায় স্কুল শিক্ষকরাও।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৮ ০৪:৫৩
নাসির হুসেন। নিজস্ব চিত্র

নাসির হুসেন। নিজস্ব চিত্র

দু’বছর আগের কথা। কিসনগঞ্জ স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল এক কিশোর। দিনমজুরি করবে বলে দিল্লি যাবে। স্কুলের শিক্ষকেরা তাকে ফিরিয়ে আনেন। উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার সেই কিশোর নাসির হুসেন উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৫৮ নম্বর পেয়েছেন। তাঁর বাড়ি বলতে কুঁড়ে ঘর। বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। পরিবারে নাসিরই প্রথম প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছেন।

মাধ্যমিকে নাসির পেয়েছিল ৬৩ শতাংশ নম্বর। কিন্তু বাবা ইব্রাহিম চাননি ছেলে আরও পড়াশোনা করুক। ভিন্‌ রাজ্যে শ্রমিকের কাজে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন তাকে। নাসিরও রাজি হয়ে গিয়েছিল। তার গোটা এলাকাতেই যে সেটাই রীতি। খুবই পিছিয়ে পড়া এই এলাকায় মাধ্যমিকে প্রথম ডিভিশনে পাশ করার পরেও, যে কারণে একই পথ স্থির করা হয়েছিল তার জন্যও।

তাই আবার স্কুলে ভর্তি করার পরেও নাসিরের পরিবার প্রথমে তা মানতে চায়নি। স্কুলের প্রধানশিক্ষক আশুতোষ দে বলেন, ‘‘নাসিরের বাবা জানান, ছেলের পিছনে খরচের মতো টাকা নেই। তাই তার পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে পারবেন না। তখন স্কুলই তার দায়িত্ব নেয়।’’ একাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগে ভর্তি হয় নাসির। আশুতোষবাবু জানান, নাসির দিল্লির ট্রেন ধরতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে শুনে তাঁরা আর দেরি করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘ট্রেনে ওঠার আগে নাসিরকে ধরতে পেরেছিলাম, সে জন্যই আজ এই দিন দেখছি।’’

কিন্তু ৯২% নম্বর পেয়েও নাসির জানেন না, ভবিষ্যৎ কোন দিকে গড়াবে। আরও যে পড়াশোনা করবে, তার টাকা কোথায় পাবেন? দুশ্চিন্তায় স্কুল শিক্ষকরাও। আশুতোষবাবুর কথায়, ‘‘নাসিরকে যে ভাবেই হোক পড়াশোনা করে দাঁড়াতে হবে জীবনে। ওকে দেখে যে আরও অনেকে স্কুলে আসবে।’’ নাসিরের ইচ্ছে, ‘‘শিক্ষক হতে চাই। এই এলাকাতেই পড়াতে চাই।’’ ইব্রাহিম কী করছেন? সারা দিন তাঁর খোঁজ মেলেনি। ছেলের স্কুলেও আসেননি।

Higher Secondary Results 2018 Nasir Hussain Labour Poverty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy