Advertisement
E-Paper

কেউ অসুস্থ, কারও বিয়ে! শুনানি শুরুর মুখে এসআইআর থেকে অব্যাহতি চাইছেন বহু মাইক্রো অবজ়ার্ভার, আতান্তরে কমিশন

শুনানি পর্বে নজরদারির জন্য প্রায় ৪৬০০ জন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীকে মাইক্রো অবজ়ার্ভার হিসাবে নিয়োগ করেছে কমিশন। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে ১১ জন করে মাইক্রো অবজ়ার্ভার থাকার কথা। সেই হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য মাইক্রো অবজ়ার্ভার প্রয়োজন ৩,২৩৪ জন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৭
এসআইআর-এর শুনানি পর্বে নজরদারি চালাবেন মাইক্রো অবজ়ার্ভারেরা।

এসআইআর-এর শুনানি পর্বে নজরদারি চালাবেন মাইক্রো অবজ়ার্ভারেরা। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) শুনানি শুরু হওয়ার কথা শনিবার থেকে। তার এক দিন আগেও শুনানির পর্যবেক্ষক অর্থাৎ, মাইক্রো অবজ়ার্ভারদের নিয়ে জট কাটল না। শুক্রবারও রাজ্যের সিইও দফতরের সামনে বহু কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী জড়ো হলেন। মাইক্রো অবজ়ার্ভারের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলেন। কেউ অসুস্থতার কারণ দেখালেন, কেউ জানালেন, ওই সময় তাঁর বিয়ে স্থির হয়েছে। কী ভাবে ডিউটি করবেন? ফলে শুনানি নিয়ে এক দিন আগেও আতান্তরে নির্বাচন কমিশন।

শুনানি পর্বে নজরদারির জন্য প্রায় ৪৬০০ জন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীকে মাইক্রো অবজ়ার্ভার হিসাবে নিয়োগ করেছে কমিশন। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে ১১ জন করে মাইক্রো অবজ়ার্ভার থাকার কথা। সেই হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য মাইক্রো অবজ়ার্ভার প্রয়োজন ৩,২৩৪ জন। অর্থাৎ, বাড়তি অনেক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে রাখা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, যাঁদের এই কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করা হয়নি। তাঁদের কারও বক্তব্য শোনা হয়নি। কেউ বাড়ি থেকে অনেক দূরের শুনানি কেন্দ্রে ডিউটির নোটিস পেয়েছেন। কেউ আবার এমন কাজ পেয়েছেন, যা করতে তিনি শারীরিক ভাবে সক্ষমই নন।

ঝাড়গ্রাম থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে শুক্রবার কমিশনের দফতরে এসেছিলেন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় কর্মরত সুব্রতকুমার পাল। বক্তব্য, তাঁর বহু বছর আগে স্ট্রোক হয়েছিল। তখন থেকেই দুই চোখে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। কথাও বলতে পারেন না। কিন্তু সুদূর উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে এসআইআর-এর শুনানির ডিউটিতে তাঁকে পাঠানো হচ্ছে। এই কাজ করা তাঁর পক্ষে সম্ভবই নয়, জানিয়েছেন সুব্রতের স্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলাম। বাকিদের মুখে শুনে সিইও দফতরে এসেছি। আপনারাই দেখুন, আমার স্বামীর কি এসআইআর-এর ডিউটি করার মতো ক্ষমতা রয়েছে? উনি তো কথা বলতেও পারেন না। ওঁকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।’’

সিইও দফতরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী অমর্ত্য বসুও। আগামী ২৫ জানুয়ারি তাঁর বিয়ে। তার পর মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনাও সারা রয়েছে। কিন্তু এসআইআর-এর শুনানি চলবে দেড় মাস ধরে। ডিউটি করতে হলে ওই সমস্ত পরিকল্পনা তাঁকে বাতিল করতে হবে। কমিশনের কাজে ‘না’ করতে চান না জানিয়েও অমর্ত্যের দাবি, বিয়ের জন্য ওই সময়ে তাঁকে ছুটি নিতেই হবে। তা যদি সম্ভব না-হয়, তবে তাঁকে এই ডিউটি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।

এ ছাড়াও অনেকে অনেক রকম সমস্যা নিয়ে সিইও দফতরে হাজির হয়েছেন। লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানিয়ে ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। এক জন জানান, তাঁর বাড়ি কলকাতায়, কর্মক্ষেত্র রুবির কাছে। কিন্তু এসআইআর-এর ডিউটি পড়েছে সুদূর জলপাইগুড়িতে। সেখানে যাওয়া এবং মাসখানেক ধরে ডিউটি করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।

কমিশন আপাতত সকলের আবেদন গ্রহণ করেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। তার পর আবেদনকারীদের সমস্যাগুলি নিয়ে কমিশন কী ভাবছে, তা তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হবে। যাঁদের সমস্যা গুরুতর, তাঁদের অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া হবে বলেও কমিশন সূত্রে দাবি।

কমিশন সূত্রে খবর, বেশির ভাগ মাইক্রো অবজ়ার্ভার এই কাজে যুক্ত হতে পেরে খুশি। কয়েক জন অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। ২০০-র কাছাকাছি মাইক্রো অবজ়ার্ভার যোগদান করতে অনিচ্ছুক। তাঁদের শো কজ় করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে হবে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে সাসপেন্ড করা হবে। কয়েক জন অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। এর জন্য ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার এইচআর-রা দায়ী। তাঁদের গাফিলতির জন্য এমন হয়েছে। এতে কমিশনের কী দোষ?

West Bengal SIR Micro Observer SIR Election Commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy