হলদিয়া-পাঁশকুড়া ডবল লাইনে ধস নামার ঘটনাকে গুরুত্ব দিলেও সাধারণ সমস্যা বলে দাবি করলেন রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার মহিষাদলের সতীশ সামন্ত হল্ট স্টেশনের কাছে কাজ চলাকালীন হঠাৎ ধস নামে। ধসের দরুণ ডাবল লাইনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার একটি রোলার মেশিনও মাটির তলায় চলে যায়। তবে ওই লাইনে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটেনি। ধসের কারণ খতিয়ে দেখতে শুক্রবার রেলের ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থলে আসেন। নেত্ৃত্বে ছিলেন নিগমের চিফ প্রোজেক্ট ম্যানেজার একে রায়। অতীতে এলাকার মাটি পরীক্ষা করে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হলেও, এই ঘটনার পর ফের মাটি পরীক্ষা করেন তাঁরা। মাটির নীচে ঢুকে যাওয়া রোলারটিও এ দিন তোলার কাজ শুরু হয়। পরে শুরু হয় ধসে যাওয়া নতুন অংশ ভরাটের কাজ।
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া থেকে পাঁশকুড়া— ২৬ কিলোমিটার রেললাইনের এই কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করার কথা ছিল। প্রাকৃতিক ও স্থানীয়, নানা সমস্যায় এই কাজে এমনিতেই দেরি হয়েছিল। তার উপর বৃহস্পতিবারের ঘটনায় রেললাইন বরাবার প্রায় দু’শো মিটার এলাকা জুড়ে বড় বড় ফাটল তৈরি হয়। দশ মিটার পর্যন্ত গভীরে মাটি বসে গিয়েছে। এতে কাজ শেষ হতে আরও কিছুটা দেরি হবে বলে নিগমের আশঙ্কা। স্থানীয়রা জানান, প্রথম লাইনটি তৈরির সময় রেললাইনের পাশের জমি থেকেই মাটি তুলে দেওয়া হয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে জল ও পানায় ভর্তি হয়ে ছিল ওই অংশ। লাইন তৈরির সময় সেই জমিতেই প্রথমে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই, এলাকার মাটি ও পরে মোরাম দিয়ে রেললাইনের ভিত তৈরির কাজ হচ্ছিল। কিন্তু, পাশেই থেকে গিয়েছিল গভীর জলা।
স্থানীয় বাসিন্দা কিংবা ওই কাজে নিযুক্ত ঠিকা শ্রমিকদের দাবি, তাড়াহুড়ো করে কাজ হচ্ছিল। ছাই দেওয়ার পর শক্ত মাটির বদলে নরম মাটি দেওয়া হয়। সেই মাটি ভালভাবে শুকোনোর আগেই মোরাম দিয়ে রোলার চালানো হচ্ছিল। যদিও এমন অভিযোগকে আমলই দিতে চাননি চিফ প্রোজেক্ট ম্যানেজার। তাঁর দাবি, “একই সমস্যা অন্যত্র এর আগেও হয়েছে। এলাকাটি নীচু জলাজমি ছিল। পাশের জমিও তাই। যার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে। এত বড় কাজে এমন সাধারণ সমস্যা হয়েই থাকে।” ফের মাটি পরীক্ষা করা হবে বলে তিনি জানান। ঘটনার তদন্তেরও আশ্বাস দেন তিনি। তাঁর কথায়, “রেললাইন তৈরির জন্য রাস্তা তৈরির কাজ ২০ শতাংশ বাকি রয়েছে।”