প্রথম বৈঠক নিষ্ফলা ছিল। শহরের পথে দশ মাইল দৌড় এ বার আর হবে কিনা সংশয় তৈরি হয়েছি। অবশেষে দ্বিতীয় বৈঠকে মেঘ কাটল। সিদ্ধান্ত হল শহরবাসীর কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে আগামী ২৩ জানুয়ারি, নির্দিষ্ট দিনেই করা হবে ঐতিহ্যের এই দৌড় প্রতিযোগিতা।
মেদিনীপুর অ্যাথলেটিক ক্লাবের উদ্যোগ এই দৌড় হয়। ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সুনীল সামন্ত বলেন, “প্রথম বৈঠক নিস্ফলা ছিল। তবে দ্বিতীয় বৈঠকে দৌড় করানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।” সুনীলবাবুর কথায়, “নোট বাতিলের ঘোষণার পরে এখন অন্য পরিস্থিতি। প্রতিযোগিতার খরচ কী ভাবে জোগাড় হবে, সেটাই ভেবে পাচ্ছিলাম না। মেদিনীপুরের মানুষের কাছেও এখন খুচরোর বড় আকাল। তবে দৌড় করানোর ব্যাপারে
ক্লাবের সকলে একমত হয়েছেন। সকলেই চান, ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক।”
প্রতি বছর ২৩ জানুয়ারি শহর মেদিনীপুরে এই দশ মাইল দৌড় হয়। শুরুর দিকে ক’বছর অবশ্য বছরের অন্য সময়ও প্রতিযোগিতা হয়েছে। বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্তের ইচ্ছেয় পরে ২৩ জানুয়ারি, সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে এই দৌড় শুরু হয়। এ বার প্রতিযোগিতার ৫২তম বর্ষ। এই দৌড়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরণীতে উপস্থিত থেকেছেন কত গুনিজন। এসেছেন চুনী গোস্বামী, অমল দত্ত, প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বুলা চৌধুরী প্রমুখ। প্রতি বছরই কোনও না কোনও তারকা ক্রীড়াবিদ্ আসেন। কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠ থেকে দৌড় বিভিন্ন পথ ঘুরে শেষও হয় এখানে। ১০০- ১৫০ জন প্রতিযোগী তাতে সামিল হন। রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ তাঁদের উৎসাহ দেন।
মেদিনীপুরের প্রবীণ এক ক্রীড়াবিদ্ বলছিলেন, “এটা সাধারণ দৌড় নয়, ঐতিহাসিক দৌড়। ১০ মাইল অর্থাৎ ১৬ কিলোমিটার দৌড় এত বছর ধরে করানো সহজ কথা নয়। শহরের এই দৌড় বন্ধ হতে পারে না।” মেদিনীপুর অ্যাথলেটিক ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সুনীলবাবুরও বক্তব্য, “ই দশ মাইল দৌড়ের সঙ্গে কত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। দৌড় করতে মেদিনীপুরবাসী সব রকম সহযোগিতা করেন। আশা করব, এ বারও সহযোগিতা মিলবে।”