প্রতীকী চিত্র।
তমলুক ও ভগবানপুর: উল্টোরথে উল্টে গেল রথের দিনের চেনা ছবি। এক সপ্তাহ আগেও রথ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল করোনা বিধি মানার দৃশ্য। তবে মঙ্গলবার উল্টোরথে বিভিন্ন এলাকায় জমায়েত হয়ে বাজানো হল দেদার ডিজে। ময়নায় সেই শব্দ তাণ্ডব থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। ভাঙচুর করা হল তাদের গাড়ি। গ্রেফতার করা হল ১৪ জনকে।
ময়না থানার নৈছনপুর-১ পঞ্চায়েতের চিরঞ্জীবপুর গ্রামে প্রতি বছর উল্টোরথে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত ডিজে-সাউন্ডবক্স বাজানোর প্রতিযোগিতা চলে। করোনা কালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ডিজে-সাউন্ডবক্স বাজানোর প্রতিযোগিতা চলছিল। শতাধিক সাউন্ড বক্স-সহ ডিজের তাণ্ডবে জেরবার স্থানীয়দের একাংশ ব্লক প্রশাসনে অভিযোগ করেন।
রাত ৯ টা নাগাদ ময়না থানার ওসি-সহ পুলিশ বাহিনী ওই গ্রামে যান। প্রথমে একটি ডিজে-সাউন্ডবক্স বাজানোর যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করেন। এসময় কয়েকজন গ্রামবাসী সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা মাইকে ঘোষণা করে লোকজনকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু উদ্যোক্তারা সেই ঘোষণা করতেই কয়েকশো গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাদের উপরে লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। তাতে তপন ভুঁইয়া নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের মাথায় আঘাত লাগে। পুলিশের দুটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পরে তপনকে রক্তাক্ত তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করেন। তাঁর মাথায় তিনটি সেলাই পড়েছে।
ওই রাতেই তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে তমলুক, নন্দকুমার ও ময়না থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী ওই গ্রামে গিয়ে তল্লাশি চালিয় এবং ১৪ জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে আক্রমণ, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দান-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ময়নার ওই গ্রামে শতাধিক সাউন্ডবক্স বাজানো হচ্ছিল অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে, তা বন্ধের চেষ্টা করে। তখন উত্তেজিত লোকজন হামলা চালায়। এক পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকা অভিযোগে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ৪ জনের পুলিশ হেফাজত ও ১০ জনের জেল হেফাজত হয়েছে।’’
অন্যদিকে, ভগবানপুর থানা এলাকার আসুটিয়া গ্রামে রথের মেলায় ডিজে প্রতিযোগিতা বসেছিল মঙ্গলবার। অভিযোগ, রাত ৯টা পরে ডিজের প্রতিযোগিতায় বহু যুবক জড়ো হয়ে নাচানাচি শুরু করেন। তা দেখতে শতাধিক গ্রামবাসী জড়ো হয়েছিলেন। খবর পেয়ে রাতে ভগবানপুর থানার পুলিশ গিয়ে ডিজে প্রতিযোগিতা বন্ধ করে এবং কয়েকজনকে আটক করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy