আধার কার্ড করে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি বিনপুরের এড়গোদার। মঙ্গলবার ধৃতদের ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। ধৃতদের নাম বিকাশ কুমার, সায়ন্ত কুমার, শ্যামসুন্দর খাটুয়া এবং পিনাকী খাটুয়া। এদের মধ্যে বিকাশ- সায়ন্ত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বাকি দু’জন ওই এলাকারই বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। তদন্তে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার দুপুরে বিনপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন বিনপুর- ২ এর বিডিও সন্তু তরফদার। অভিযোগে বিডিও জানান, ওই এলাকায় আধার কার্ড করে দেওয়ার নাম করে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। অথচ, প্রশাসন এ ব্যাপারে কিছুই জানে না। কয়েকজন মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা নিচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে বিকাশ, সায়ন্ত ও শ্যামসুন্দরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শ্যামসুন্দরের বাবা পিনাকী খাটুয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে ল্যাপটপ-সহ বেশ কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ধৃতেরা এলাকায় পোস্টার দিয়েও প্রচার করেছিল যে ওই এলাকায় আধার কার্ড তৈরির শিবির হবে। বস্তুত, প্রশাসনের উদ্যোগে মাঝেমধ্যেই এমন শিবির হয়। ফলে, বেশ কয়েকজন মানুষ সহজেই প্রতারিত হন। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ড নম্বর যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অগস্ট মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করার কথা। পাশাপাশি, এখন সরকারি সাহায্য- অনুদান, গ্যাসের ভর্তুকি, সরকারি ভাতা- এ সবের জন্যও আধার জরুরি।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “ওদের সঙ্গে প্রশাসনের কোনও যোগই নেই। ওরা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা আদায় করছিল। আধার করে দেওয়ার নাম করে এক- একজনের কাছ থেকে ১৮০ টাকা করে নিচ্ছিল। তাই বিডিও- কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে। বিডিও সেই মতো অভিযোগও জানান। তারপরই পুলিশ পদক্ষেপ করে।”
মঙ্গলবার ধৃতদের ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করা হলে আসামীপক্ষের আইনজীবী কৌশিক সিংহ দাবি করেন, বিকাশ- সায়ন্তের আধার কার্ড তৈরির অনুমতি রয়েছে। ঝাড়খণ্ড সরকারই এই অনুমতি দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এরা আধার কার্ড তৈরি করতে আসেওনি। এরা এসেছিল এক পরিচিতের বাড়িতে। পুলিশ মিথ্যা মামলায় এদের ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধৃতদের সঙ্গে কোনও দুষ্টচক্রের যোগ রয়েছে। যে চক্র আধার করে দেওয়ার নাম করে টাকা আদায় করে। মানুষকে প্রতারিত করে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আধার তৈরির শিবিরের জন্য এলাকায় পোস্টার সাঁটানো হয়েছিল। সেই পোস্টারও ধৃতদের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে। ধৃতদের সঙ্গে কোনও দুষ্টচক্রের যোগ রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।” স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের এক কর্তাই এই পোস্টারের ব্যাপারটি প্রথমে বিডিও- কে জানান। বিডিও বুঝে যান, পোস্টারটি ভুয়ো। এরপর তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy