Advertisement
১১ মে ২০২৪

সুপারি দিয়ে ভাইকে খুনের ছক বানচাল, গ্রেফতার চার

ভাইকে খুনের জন্য দে়ড় লক্ষ টাকা দিয়ে সুপারি কিলার লাগিয়েছিল দাদা। দেওয়া হয়ে গিয়েছিল অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা। শুক্রবার বিকেলে ‘টার্গেট’ সঞ্জয় হেমব্রমকে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য সুপারি কিলার পেরো হাঁসদাকে বিনপুর থানার কাছে একটি ধাবায় দেখা করতে বলে রাজীব হেমব্রম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০১:১১
Share: Save:

ভাইকে খুনের জন্য দে়ড় লক্ষ টাকা দিয়ে সুপারি কিলার লাগিয়েছিল দাদা। দেওয়া হয়ে গিয়েছিল অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা। শুক্রবার বিকেলে ‘টার্গেট’ সঞ্জয় হেমব্রমকে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য সুপারি কিলার পেরো হাঁসদাকে বিনপুর থানার কাছে একটি ধাবায় দেখা করতে বলে রাজীব হেমব্রম। তার আগেই এ দিন দুপুরে পুলিশ জামবনির বাঁকবেড় বাসস্টপের কাছ থেকে পেরো ও তাঁর এক সহযোগীকে ধরে পুলিশ। পরে রাজীব-সহ আরও একজনকে ধরে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, বিনপুর থানার দহিজুড়ির পলাশবনির বাসিন্দা রাজীব ভাই সঞ্জয়কে খুন করার জন্য জামবনির ডুমুরিয়ার বাসিন্দা পেরোকে দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছিল। এই টাকা সে মায়ের কাছ থেকে নিয়েছিল বলে জেনেছে পুলিশ। অপারেশনের জন্য পেরোকে ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোটরবাইক দেয় রাজীব। কাজ হয়ে গেলে বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। অগ্রিম টাকা হাতে পেয়ে পেরো শুক্রবার পিস্তল কিনতে এসেছিল। পিস্তল ও গুলি কেনা হয়ে গেলে শুক্রবারই রাজীবের সাথে গিয়ে ‘টার্গেট’ সঞ্জয়কে চিনে নেওয়ার কথা ছিল। এ দিন দুপুরে পিস্তল ও গুলি কিনতে গেলে বাঁকবেড় বাসস্টপ থেকে পেরো-সহ দু’জনকে ধরে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন পিস্তল ও গুলি কেনার পর পুলিশ পেরোকে দিয়ে রাজীবকে ফোন করায়। ফোনে রাজীব বিকেলে বিনপুর থানা এলাকায় একটি ধাবায় তাকে দেখা করতে বলে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল পুলিশ। এ দিন বিকেলে রাজীব তার এক সঙ্গী রামজাদ হাঁসদাকে নিয়ে ধাবায় এলেই হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সঞ্জয়ের স্ত্রী শকুন্তলা আগে থেকেই এই খুনের ব্যাপারে জানত। কিন্তু কেন এই খুনের ছক? বছর ছাব্বিশের সঞ্জয় প্রায় দিনই রাতে মদ খেয়ে এসে বাড়িতে অশান্তি করত। সে মা ও বৌকে মারধর করত বলেও অভিযোগ। তাঁর স্বামীর সঙ্গে স্থানীয় একটি মেয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলেও সন্দেহ করত শকুন্তলাদেবী। এই জন্যই সঞ্জয়কে মেরে ফেলার ছক করা হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশ রাজীবের থেকে ৬০ হাজার টাকা ও পেরোর থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। ধৃতদের থেকে একটি পিস্তল ও গুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, রাজীব যে মোটরবাইকটি পেরোকে দিয়েছিল সেটি রামজাদের। বাইকটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঝাড়গ্রামের এসডিপিও বিবেক বর্মা বলেন, ‘‘একজনকে নিশ্চিত মৃতুর হাত থেকে বাঁচাতে পেরে খুব ভাল লাগছে। খুন হয়ে যাওয়ার পর হয়তো এরা ধরা পড়ত কিন্তু সঞ্জয় মারা যেত।’’ ধৃত চারজনের বিরুদ্ধে ডাকাতির চেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র ও অস্ত্র আইনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। আজ, শনিবার তাদের ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হবে। ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমরা খুনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে এ ছাড়া অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Youths Arrest Murder attempt
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE