Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারে ৫৫ কোটি বরাদ্দ    

পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় প্রতিটি ব্লকেই বেশকিছু গ্রামীণ পাকা কিংবা মোরাম রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ওই সব এলাকায়। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। বেহাল রাস্তা নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে মাঠে নেমে পড়েছে বিরোধী দলগুলি।

তালপুকুর রেলগেট থেকে গণপতিনগর পর্যন্ত রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

তালপুকুর রেলগেট থেকে গণপতিনগর পর্যন্ত রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২৬
Share: Save:

দিঘা-কলকাতা সড়কে নন্দকুমার কলেজ মোড় থেকে কল্যাণচক হাইস্কুল পর্যন্ত এক কিলোমিটার মোরাম রাস্তা পাকা হয়েছিল ২০০৮ সালে। রাজ্য মৎস্য দফতরের বরাদ্দ টাকায় গ্রামীণ ওই রাস্তা পাকা করার পর বাসিন্দারা খুশি হলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ মাত্র দু’বছরের মধ্যেই পাকা রাস্তা খানাখন্দে ভরে যায়। তারপর থেকে ওই বেহাল রাস্তাতেই যাতায়াত করছেন স্থানীয় ১০-১২টি গ্রামের মানুষ। রাস্তার হাল না ক্ষোভ জমছে এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, একই অবস্থা তমলুকের তালপুকুর থেকে গণপতিনগর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মোরাম রাস্তার। বছর দশেক আগে শেষবার সংস্কার হওয়া ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন এলাকার ১০-১২ টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। তাঁদের অভিযোগ, সংস্কারের নামে যে প্রহসন হয়েছে তা রাস্তার হাল দেখলেই টের পাওয়া যায়। বার বার পঞ্চায়েতে দাবি জানানো হলেও রাস্তা পাকা তো দূর, সংস্কারও হয়নি। এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় যাতায়াত আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুধু নন্দকুমার নয় পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় প্রতিটি ব্লকেই বেশকিছু গ্রামীণ পাকা কিংবা মোরাম রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ওই সব এলাকায়। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। বেহাল রাস্তা নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে মাঠে নেমে পড়েছে বিরোধী দলগুলি। এই অবস্থায় জেলার গ্রামীণ পাকা ও মোরাম রাস্তা মিলিয়ে প্রায় ১০০টি রাস্তা সংস্কারের জন্য মোট ৫৫কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত ভোটের আগেই রাস্তার কাজ শেষ করতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলায় গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারে এই বিপুল বরাদ্দের কথা স্বীকার করেছেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের (আরআইডিএফ) অর্থে আমাদের জেলায় প্রচুর গ্রামীণ সড়ক তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও হলদিয়া ও দিঘা- শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে জেলায় বহু গ্রামীণ রাস্তা পাকা হয়েছে।’’ তিনি জানান, এইসব রাস্তার বাইরেও বিভিন্ন দফতরের বরাদ্দ টাকায় বেশকিছু গ্রামীণ রাস্তা পাকা বা মোরামের হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে অর্থাভাবে সেগুলি আর সংস্কার করা যায়নি। এরকম রাস্তা সংস্কারের জন্য ৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

তবে পঞ্চায়েত ভোটের জন্যই এমন উদ্যোগ বলে মানতে চাননি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের চাহিদার কথা ভেবেই আমরা পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নিয়ে রাস্তা সংস্কারের জন্য টাকা চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। অর্থ বরাদ্দ করার পরেই দ্রুত কাজ শুরু করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।‘’’

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় ২৫ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার প্রায় সম্পূর্ণ। শীঘ্রই কাজও শুরু হবে। জেলার ২৫টি ব্লকের প্রতিটিতেই গড়ে ৩-৪ টি করে বেহাল পাকা বা মোরাম রাস্তা সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। নন্দকুমার কলেজ মোড় থেকে কল্যাণচক হাইস্কুল পর্যন্ত রাস্তার সংস্কারে ৪৭ লক্ষ্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তালপুকুর থেকে গণপতিনগর পর্যন্ত মোরাম রাস্তা সংস্কারে ৩২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Roads Renovation Investment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE