Advertisement
২১ মে ২০২৪
সংগঠনে রদবদলের ভাবনা

তৃণমূল নেতা খুনে ধৃত বুথ সভাপতি-সহ ৮

তন্ময়বাবু খুনের ঘটনায় চন্দ্রকোনা জুড়ে শাসক দল তথা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল পুরোপুরি প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। দলেরই নীচু তলার কর্মীদের একাংশ ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে ব্লক স্তরের নেতাদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন।

মূল অভিযুক্ত শান্ত কোলে। সোমবার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

মূল অভিযুক্ত শান্ত কোলে। সোমবার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০১:১৩
Share: Save:

চন্দ্রকোনার ছোট মুইদা গ্রামে তৃণমূল নেতাকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় দলেরই বুথ সভাপতি শান্ত কোলে সহ আটজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার তন্ময় কোলে নামে ওই তৃণমূল নেতাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল শান্ত কোলে ও তার দলবলের বিরুদ্ধে।

ধৃতদের সোমবার ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতের দাদা জয়দেব কোলে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “ধৃতদের জেরা করে খুনের কারণ জানার চেষ্টা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজও চলছে যাতে নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া যায়।”

তন্ময়বাবু খুনের ঘটনায় চন্দ্রকোনা জুড়ে শাসক দল তথা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল পুরোপুরি প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। দলেরই নীচু তলার কর্মীদের একাংশ ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে ব্লক স্তরের নেতাদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন। ব্লক সভাপতি অমিতাভ কুশারীর বিরোধী গোষ্ঠী এলাকায় দফায় দফায় মিছিলও করছে। পাল্টা জবাব দিতে তৈরি হচ্ছে অমিতাভ কুশারীর অনুগামীরাও। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় রবিবার রাত থেকেই গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।

স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই ব্লকে অস্থির পরিবেশ চলছে। দলের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রকাশ্যেই চলছে তোলা আদায়। টাকার ভাগ নিয়ে মারপিট রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি-সহ বিভিন্ন দফতরে ঠিকাদারদের রমরমা। রাজ্য ও জেলা নেতাদের প্রমাণ-সহ একাধিক তথ্য পাঠানো হলেও কেউ কোনও পদক্ষেপ করেননি। যার পরিণতিতেই এই খুন।

স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের আরও অভিযোগ, গীতাঞ্জলি প্রকল্প-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে উপভোক্তাদের কাছ থেকে তোলা আদায় করছেন নেতাদের একাংশ। চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই-সহ মহকুমা জুড়েই একের পর সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ নীরব উপরতলার নেতৃত্ব।

তবে তন্ময়বাবুর খুনের ঘটনায় চন্দ্রকোনা বিধানসভা এলাকায় কর্মীরা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে এমন ঘটনায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের কাছে টানতে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘ছোট মুইদা-সহ চন্দ্রকোনায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নানা ঘটনা নিয়ে দলনেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।”

জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “শীঘ্রই চন্দ্রকোনায় দলের সংগঠনে রদবদল করা হবে। দলে যে সব নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE