E-Paper

রেলের ছাড়ের টিকিটে যাত্রা ‘ভুয়ো’ প্রতিবন্ধীর

সোমবার শালিমার-হায়দরাবাদ ইস্টকোস্ট এক্সপ্রেসে তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গালের বাসিন্দা এম কৃষ্ণকে খড়্গপুরে ধরেন চিফ টিকিট ইন্সপেক্টর জয়ন্ত মুন্সি। ওই যাত্রী প্রতিবন্ধী কোটার টিকিটে এই ট্রেনে যাত্রা করছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৩ ০৭:৫৭
An image of the local train

ট্রেনের ভাড়ায় প্রতিবন্ধীদের ছাড় দিতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে রেল। ফাইল ছবি।

ট্রেনের ভাড়ায় প্রতিবন্ধীদের ছাড় দিতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে রেল।

বিভিন্ন রাজ্যের দেওয়া প্রতিবন্ধী শংসাপত্রে কারচুপির আশঙ্কায় রেল নিজেদের চিকিৎসক নিযুক্ত করে শংসাপত্র যাচাই করে। প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিবন্ধকতা আছে কি না— তা ঠিক করেন রেলের চিকিৎসক। তবে এতকিছুর পরেও ‘ভুয়ো’ নথি ব্যবহার করেই রেলের টিকিট কাউন্টার থেকে ছাড়ের টিকিট মিলছে বলে অভিযোগ। এবার চলন্ত ট্রেনে এমনই এক ‘ভুয়ো’ টিকিটধারী যাত্রীকে পাকড়াও করলেন টিকিট পরীক্ষক।

খড়্গপুর রেল ডিভিশন সূত্রে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। সোমবার শালিমার-হায়দরাবাদ ইস্টকোস্ট এক্সপ্রেসে তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গালের বাসিন্দা এম কৃষ্ণকে খড়্গপুরে ধরেন চিফ টিকিট ইন্সপেক্টর জয়ন্ত মুন্সি। ওই যাত্রী প্রতিবন্ধী কোটার টিকিটে এই ট্রেনে যাত্রা করছিলেন। সন্দেহ হওয়ায় জয়ন্ত তাঁর নথি যাচাই করে দেখেন। রেলের দাবি, ওই যাত্রী তেলেঙ্গানা রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দেখালেও রেলের পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি।প্রতিবন্ধী কোটার ছাড়ের টিকিটের জন্য যেটা প্রয়োজন। এর জেরেই ওই যাত্রীকে পাকড়াও করে মোটা টাকা জরিমানা করেন রেলের ওই মুখ্য টিকিট পরিদর্শক।

খড়্গপুর রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাজেশ কুমার বলেন, “ওই যাত্রী রেলের দেওয়া কোনও প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। তাই তাঁকে আমাদের চিফ টিকিট ইন্সপেক্টর পাকড়াও করে জরিমানা করেন। আমরা এমন ভুয়ো প্রতিবন্ধী পাকড়াও করতে কড়া পদক্ষেপ চালাচ্ছি। বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিবন্ধী শংসাপত্রে অনেক সময়েই কারচুপি ধরা পড়ছে। তাই কেউ প্রতিবন্ধী ছাড়ের আবেদন জানালে আমাদের চিকিৎসক প্রতিনিধি নথি যাচাই করার পরে পরিচয়পত্র দিই। এক্ষেত্রে সেটা ছিল না।”

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিবন্ধীরা রেলের ছাড়ের জন্য আবেদন জানালে তাঁদের একটি ফর্ম দেওয়া হয়। সেই ফর্ম পূরণের সময় রাজ্যের দেওয়া প্রতিবন্ধী শংসাপত্র-সহ আবেদন জানাতে হয়। এর পরে রেলের চিকিৎসকরা সেই শংসাপত্র যাচাই করেন। কোথাও অনিয়মের আশঙ্কা করলে সরাসরি ওই প্রতিবন্ধীর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। তার পরেই রেলের কমার্শিয়াল বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র। সেই পরিচয়পত্রে থাকে বিশেষ নম্বর। টিকিট কাটার সময় ওই নম্বর ব্যবহার করেই টিকিট কাটতে হয়। ট্রেনে যাত্রার সময়েও দেখাতে হয় পরিচয়পত্র। এক্ষেত্রে বুকিং কাউন্টারের কর্মী তেলেঙ্গানার ওই যাত্রীর পরিচয়পত্র ছাড়া টিকিট কীভাবে দিয়েছিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

খড়্গপুরের নবজীবন দিব্যাঙ্গ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরুণকুমার শ্যামল বলেন, “আমাদের রাজ্য যে শংসাপত্র দেয় সেটাই তো গুরুত্ব পাওয়া উচিত। সেটাও তো চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেই দিচ্ছেন। আমরা সেই শংসাপত্রের ভিত্তিতেই রেলের পরিচয়পত্র পাই। কিন্তু সেই পরিচয়পত্র ছাড়া কীভাবে একজন টিকিট পেয়ে গেল সেটাও তো রেলের দেখা উচিত।” রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাজেশ কুমার জানান, তদন্তে মনে হচ্ছে ওই যাত্রী অন্য কোনও প্রতিবন্ধীর রেলের পরিচয়পত্রের নকল ব্যবহার করে টিকিট কেটেছিলেন। নম্বর সঠিক হওয়ায় টিকিট পেয়ে গিয়েছিলেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Train Ticket Indian Railway Ticket Checker Disabled Person

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy