Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩
খড়্গপুর

শব্দ-আলোয় ইতিহাস কথন, সাজছে গোপগড়

গোপগড় ইকো পার্কটিকে এ বার শিক্ষামূলক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বন দফতর। পার্কের হেরিটেজ ভবনকে ঘিরে আলো-ধ্বনির মাধ্যমে মেদিনীপুরের অতীত ইতিহাস প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অর্কিড ও প্রজাপতির উদ্যানও তৈরি করা হবে।

হেরিটেজ এই ভবন ঘিরেই হচ্ছে পরিকল্পনা। নিজস্ব চিত্র।

হেরিটেজ এই ভবন ঘিরেই হচ্ছে পরিকল্পনা। নিজস্ব চিত্র।

কিংশুক গুপ্ত
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৩২
Share: Save:

গোপগড় ইকো পার্কটিকে এ বার শিক্ষামূলক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বন দফতর। পার্কের হেরিটেজ ভবনকে ঘিরে আলো-ধ্বনির মাধ্যমে মেদিনীপুরের অতীত ইতিহাস প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অর্কিড ও প্রজাপতির উদ্যানও তৈরি করা হবে। সব মিলিয়ে খরচ প্রায় দেড় কোটি টাকা। আলো-ধ্বনির জন্য খরচ হবে ৩৫ লক্ষ টাকা। প্রকল্প রূপায়ণে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ এবং পর্যটন দফতরের কাছে অর্থসাহায্য চাওয়া হবে।

Advertisement

মেদিনীপুরে ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামে মেদিনীপুরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেই বিষয়টি আলো ও ধ্বনির সাহায্যে দর্শকদের সামনে তুলে ধরার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে মেদিনীপুরের ইতিহাস তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ।” মেদিনীপুরের ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার জুঁই অধিকারীকে এর পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে প্রায় ৭৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে বন দফতরের গোপগড় ইকো পার্ক। প্রকৃতির মাঝে বনভোজন, বিনোদন ও বেড়ানোর আদর্শ জায়গা এটি। এখানে রয়েছে বন দফতরের অতিথিশালা, ওয়াচ টাওয়ার, বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ বাগান। সপ্তাহে সাতদিনই খোলা থাকে প্রকৃতি উদ্যান। পার্কের মাঝে রয়েছে একটি হেরিটেজ ভবন।

মেদিনীপুরের ইতিহাস নিয়ে দীর্ঘদিন চর্চা করছেন চিন্ময় দাশ। প্রবীণ এই গবেষক জানালেন, জনশ্রুতি, প্রায় পাঁচশো-ছ’শো বছর আগে ওড়িশার রায়বনিয়া গড়ের রাজা বিরাটগুহ মেদিনীপুরে উঁচু টিলার উপর একটি দুর্গ তৈরি করেছিলেন। সেটিই পরে গোপগড় নামে পরিচিত হয়। যদিও সেই দুর্গের এখন আর কোনও অস্তিত্ব নেই। ইংরেজ আমলে এখানে যে নীলকুঠি তৈরি হয়েছিল, অস্তিত্ব নেই সেটিরও। লাল ইটের ভাঙাচোরা যে অট্টালিকা ‘হেরিটেজ ভবন’-এর তকমা পেয়েছে সেটি প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো। তেলিনিপাড়ার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কোনও এক জমিদার বাগানবাড়ি হিসেবে বাড়িটি বানিয়েছিলেন বলে শোনা যায়।” মেদিনীপুরের রেঞ্জ অফিসার জুঁইদেবী বলেন, ‘‘ভবনটির ইতিহাস যাই হোক না কেন, মেদিনীপুরের নানা অজানা ইতিহাসের সাক্ষী ওই এলাকাটি। তাই ভবনটিকে প্রতীকী ভাবে ব্যবহার করে সেখানে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। তাতে ক্ষুদিরাম বসু, হেমচন্দ্র কানুনগো, প্রদ্যোত ভট্টাচার্যের মতো বিপ্লবীদের পাশাপাশি, বীরেন্দ্রনাথ শাসমল, রাজনারায়ণ বসু, গোষ্ঠবিহারী পালের মতো মেদিনীপুরের মনীষীদের কথা জানতে পারবে নতুন প্রজন্ম।’’

Advertisement

বন দফতর সূত্রে খবর, গোপগড় ইকো পার্কের ওই হেরিটেজ ভবন সংস্কারের জন্য প্রত্নতত্ত্ববিভাগের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা চলছে। ডিএফও রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমরা ইতিহাসবিদদের সঙ্গে আলোচনা একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য-কাহিনী দর্শকদের সামনে উপস্থাপিত করতে চাই।” সেই সঙ্গে ইকো পার্কে একটি অকির্ডেরিয়ান তৈরি করা হবে। সেখানে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত রকম অর্কিড দেখা যাবে। এ ছাড়া একটি বাটারফ্লাই গার্ডেন করারও পরিকল্পনা রয়েছে। রং-বেরঙের বিভিন্ন প্রজাপতির সম্পর্কে তথ্য-সহ মডেল থাকবে সেখানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.