মায়ের সঙ্গে সুদীপ। নিজস্ব চিত্র
রাজকুমার গিরি
কাঁথি: বাবা দিনমজুর। মা বিড়ি শ্রমিক। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসার। তাতে অবশ্য দমে যায়নি কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের বনমালীচট্টা হাইস্কুলের ছাত্র সুদীপ ঘোড়াই। জীবন-যুদ্ধে লড়তে লড়তেই সে চালিয়ে গিয়েছে পড়াশোনা। আর তাতে এসেছেও সাফল্য। বুধবার মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোনার পরে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে সে।
দিনমজুর হলেও ছেলের পড়াশোনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বাবা গুরুপদ ঘোড়াই। ছেলের পড়ায় যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য লাউদা গ্রামের বাসিন্দা গুরুপদবাবু ছেলেকে হস্টেলে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাদ সাধে টাকা। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন স্কুলের শিক্ষকেরা। গুরুপদবাবুর কথায়, ‘‘আমি দিনমজুর। প্রতিদিন লোকের বাড়িতে কাজ করি। কোনও রকমে দিন গুজরান হয়। ছেলে পড়াশোনা করুক, তা চেয়েছিলাম।’’
ক্রিকেট, ফুটবলের ভক্ত সুদীপ ৬৪৯ নম্বর পেয়েছে। বুধবার সুদীপ বলে, ‘‘স্কুলের শিক্ষকদের জন্যই এই রেজাল্ট করতে পেরেছি। আমাদের এলাকায় ভাল চিকিৎসক নেই। আমি চিকিৎসক হয়ে মানুষের পাশে থাকতে চাই।’’
বনমালীচট্টা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ মামুদ হোসেন বলেন, ‘‘সুদীপ আমাদের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকেই পড়ছে। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি ওর আগ্রহ। স্কুলের শিক্ষকেরা ছাত্রদের খোঁজ খবর রাখেন। আর্থিক সমস্যা যাতে, কারও পড়ার পথে বাধা না হয়, তাই আমরা ওকে হস্টেলে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা করে দিই।’’
ছেলের সাফল্যে খুশি সুদীপের মা দুর্গাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের পড়াশোনার ব্যাপারে সব সময় পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। ও চিকিৎসক হতে চায়। ওর ওই স্বপ্নপূরণে আরও বেশি সময় ধরে বিড়ি বাঁধার কাজ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy