জমাটি আড্ডা, হৈ হুল্লোড়ের ইচ্ছে কার না থাকে। তবে সে সব এখন তাঁদের জীবনে খুব একটা আসে না। বেঁচে থাকতে ভরসা ডায়ালিসিস। সপ্তাহের এক বা একাধিক দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা জুড়ে চিকিৎসাই সম্বল। তাই আনন্দ উপভোগ করার ইচ্ছে থাকলেও সচরাচর তা খুব একটা হয়ে ওঠে না। অসুস্থতার পাশাপাশি গ্রাস করে অবসাদ। তবে মন ভাল থাকলে শরীরও ভাল থাকে অনেকটা। তাই রোগীদের আনন্দের স্বাদ দিতে বুধবার বনভোজনের আয়োজন করল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার একটি বেসরকারি হাসপাতাল।
বাঙালির কাছে শীত মানেই বনভোজন। অসুস্থেরা সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকবে কেন? তাই তিরিশ জন রোগী ও তাঁদের পরিবারের একজন করে সদস্য নিয়ে শীতের মরশুমে চন্দ্রকেতু উদ্যানে চড়ুইভাতির আয়োজন করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শীতের দুপুরে আড্ডা, ঘুরে বেড়ানোর পরে পাতে ছিল সুস্বাদু মাছ, মাংস, তরকারি, মিষ্টি, চাটনি, পাঁপড়। হাসপাতালের এই উদ্যোগে খুশি রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।
বনভোজনে অংশগ্রহণ করতে এসে অসুস্থ সৈয়দ আশরাফুল আলম বলেন, ‘‘সপ্তাহে দু’দিন করে ডায়ালিসিস নিতে হয়। চিকিৎসা তো চলবেই কিন্তু বনভোজনে অংশ নিতে পেরে মন ভাল হয়ে গিয়েছে। কয়েক বছর আগে যেমন আনন্দ করতাম সেই দিনগুলি মনে পড়ে গেল।’’
এক রোগীর আত্মীয় মনোয়ারা বিবি বলেন, ‘‘ডায়ালিসিস রোগীকে নিয়ে সপ্তাহে দু’দিন নার্সিংহোমে যেতে হয়। বাকি সময়টা অসুস্থকে গৃহবন্দি থাকতে হয়। তবে আজকের দিনটা সত্যিই আনন্দের।’’
আরও পড়ুন:
চিকিৎসক গৌতম প্রতিহার জানান, কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডায়ালিসিস দেওয়া হয়। তাঁরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। আনন্দের অনুভূতি দিতে ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতেই এই আয়োজন। এতে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উৎসাহ পেয়েছেন অসুস্থেরা।
বেসরকারি হাসপাতালের কর্ণধার লক্ষণ কর্মকার বলেন, ‘‘দুঃস্থ রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকেই ডায়ালিসিস করা হয় এখানে। তাঁদের মন ভাল রাখার জন্যেই বনভোজনের আয়োজন।’’