E-Paper

জন্মদিনের রাতে বাইক দুর্ঘটনা, মৃত্যু কিশোরের

মৃত সুমিত দাস (১৬) ওরফে নীলের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার মানিকপাড়া অঞ্চলের ললিতাশোলে। ওই ঘটনায় সুমিতের আরও পাঁচ বন্ধু অল্পবিস্তর জখম হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জন ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৫৬
A Photograph of Sumit Das

জন্মদিনের রাতে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত সুমিত দাস। নিজস্ব চিত্র।

১৬ তম জন্মদিন উদ্‌যাপনের রাতে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক কিশোরের। সোমবার রাতে ঝাড়গ্রাম থানার বেলতলা-মানিকপাড়া নতুন রাস্তার মাঝে রাধাশ্যামপুর এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সুমিত দাস (১৬) ওরফে নীলের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার মানিকপাড়া অঞ্চলের ললিতাশোলে। ওই ঘটনায় সুমিতের আরও পাঁচ বন্ধু অল্পবিস্তর জখম হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জন ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডেবরার একটি আবাসিক স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত সুমিত। বেশ কিছুদিন ধরে মানিকপাড়ায় বাড়িতেই ছিল সে। সোমবার ছিল সুমিতের ১৬তম জন্মদিন। রাতে তিনটি বাইকে পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে বালিভাসার একটি ধাবায় বিরিয়ানি খেতে গিয়েছিল সুমিত। বাবার বাইক নিয়ে গিয়েছিল সে। বেলতলা-মানিকপাড়া নতুন রাস্তা দিয়ে বাইকে দ্রুত গতিতে ফেরার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সদ্য তৈরি হওয়া ওই রাস্তাটি রাতে ফাঁকা থাকে। সেখান দিয়ে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময়ে আচমকা একটি গরু চলে এলে বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারায় সুমিত। গরুটিকে বাইক সমেত ধাক্কা মেরে ছিটকে পড়ে সুমিত ও তার এক বন্ধু। রাস্তার পাশে কংক্রিটের গার্ড ওয়ালে ধাক্কা খেয়ে মাথায় গুরুতর চোট পায় সুমিত। পিছনে থাকা বন্ধুটিও বাইক থেকে পড়ে গিয়ে জখম হয়। সুমিতের বাইকটির দুর্ঘটনার অভিঘাতে পিছনের দু’টি বাইকও নিয়ন্ত্রণ হারায়। ওই দু’টি বাইক উল্টে গিয়ে বাকি চার আরোহীও জখম হয়। খবর পেয়ে সুমিতের বাড়ির লোকজন ও স্থানীয়রা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সুমিত-সহ জখমদের উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক সুমিতকে মৃত ঘোষণা করেন। জখম পাঁচ জনের মধ্যে দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর জখম তিনজন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

সুমিতের দাদা কলেজ পড়ুয়া শুভম দাস বলেন, ‘‘সন্ধ্যায় মানিকপাড়ায় বন্ধুদের সঙ্গে কেক কেটে ভাই জন্মদিন উদযাপন করেছিল। পরে বাবার বাইক নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়িয়েছিল রাতের খাওয়া দাওয়া সারতে। খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি ভাইয়ের কপাল ও মাথা জুড়ে গভীর ক্ষত। দেহ নিথর। চোখ নিষ্পলক!’’ সুমিতের বাবা অনুপ দাস ব্যবসা করেন। ছোট ছেলের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ তিনি ও তাঁর স্ত্রী চন্দনা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুমিতের বন্ধু ভবেশ মাহাতো, হিমেশ মাহাতো ও রাজরূপক মাহাতোরাও কথা বলার মত অবস্থায় নেই। সুমিতের বাবা অনুপ দাসের বন্ধু দীনেশ শর্মা বলছেন, ‘‘এভাবে তরতাজা ছেলেটা শেষ হয়ে গেল মেনে নিতে পারছি না।’’

এই দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় মহলে প্রশ্ন উঠেছে, নাবালকদের হাতে অভিভাবকরা কেন বাইক তুলে দিচ্ছেন! হেলমেট না পরে দ্রুত গতিতে বাইক চালানোর ফলে প্রতি বছরই পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকও মানছেন, ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কর্মসূচির পরেও একাংশ অভিভাবক সচেতন হচ্ছেন না। মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহাশিস মাহাতো বলেন, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে পুলিশের ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কর্মসূচির পরও পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে অনেকে উদাসীন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Teenage Boy Death bike accident

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy