Advertisement
০১ মে ২০২৪

নারী দিবসে নাবালিকার বিয়ে, আগেই রুখল প্রশাসন

বিডিও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিয়ে রোখার ব্যাপারে ওই ছাত্রীর বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন। শেষে রামনগর থানার পুলিশ ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে বিয়ে বন্ধের জন্য অনুরোধ করেন।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামনগর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০১:১৫
Share: Save:

আন্তর্জাতিক নারী দিবসেই ঠিক হয়েছিল নাবালিকা কিশোরীটির বিয়ে। তাতে রাজি মত ছিল না তার। মনের কথা জানিয়েছিল সহপাঠীদের। তাদের কাছ থেকেই ওই নাবালিকা বিয়ের কথা জানতে পারেন স্কুলের শিক্ষকেরা। পরে পুলিশ এবং প্রশাসনের তৎপরতায় রোখা হয় বিয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রামনগর থানার উত্তর মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরী দেপাল বাণেশ্বর চারুবালা বিদ্যামন্দিরের একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। আগামী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসেই পাশের গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। নাবালিকার বান্ধবীদের কাছ থেকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল বেরা বিয়ের বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি খবর দেন রামনগর থানা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা চাইল্ড লাইনকে। চাইল্ড লাইন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানান রামনগর-২ এর বিডিও মনোজ কাঞ্জিলালকে।

বিডিও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিয়ে রোখার ব্যাপারে ওই ছাত্রীর বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন। শেষে রামনগর থানার পুলিশ ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে বিয়ে বন্ধের জন্য অনুরোধ করেন। চাইল্ড লাইনের ব্যবস্থাপনায় সেই নাবালিকা ছাত্রী, তার বাবা এবং দুই প্রতিবেশী বুধবার বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষকরা নাবালিকা ও তার বাবাকে বোঝান। তার পরে বিয়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেই ওই পরিবার।

ওই নাবালিকার বাবা বলেন, “আমরা গরিব। তাই মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু নাবালিকার বিয়ের এত অসুবিধা আছে, তা জানা ছিল না। স্কুলে সব শুনে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করেছি।’’ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল বেরা বলেন, “মেয়েটির বাবা দিনমজুর। তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আঠারো বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে আমার কাছে মুচলেকাও দিয়েছেন।’’

আন্তজার্তিক মহিলা দিবসে এই বিশেষ দিনগুলি সম্পর্কে জানেন?

পাঁশকুড়ার গোলঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চিয়াড়া গ্রামেও এক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন। স্থানীয় সূত্রে খবর, চিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা ভোলানাথ দাসের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। ওই কিশোরী এই বছর স্থানীয় রাজনগর হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। তার বয়স এখন ১৬। বিয়ের পেয়েই বুধবার বিকেলে সেখানে হাজির হন পাঁশকুড়ার বিডিও ধেন্দুপ ভুটিয়া। বিয়ে বাড়িতে সরকারি আধিকারিকদের দেখে হকচকিয়ে যান দাস পরিবারের সদস্যরা। নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার কুফল তাঁদের বোঝান বিডিও। পরে আঠারো বছরের আগে মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দেন তার পরিজন। পাত্রপক্ষও ব্লক অফিসে গিয়ে লিখিত ভাবে ভুল স্বীকার করে। বিডিও ধেনধুপ ভুটিয়া বলেন, ‘‘আঠারো বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে দিলে নানা ধরনের অসুবিধা আসতে পারে। ওই বিষয়গুলি পাত্রীপক্ষকে বোঝানোর পর তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত বদলান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Marriage Women's Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE