শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সপ্তাহখানেক আগে ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটে’র (ইডি) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ঘনিষ্ঠের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি নগদ টাকা। ওই দুর্নীতির তদন্তে আরও গভীরে যেতে কলকাতা-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে তাদের তল্লাশি করতে আশার আশঙ্কা জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছছে যে, সরকারি আধিকারিকের নীলবাতি গাড়ি রাস্তা দিয়ে যেতে দেখলেও এলাকাবাসী ভাবছেন— ‘ওই বুঝি ইডি এল’।
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা মহকুমার একটি জমজমাট এলাকা ভগবানপুরের হাট-বাজার। এই বাজারেরে বিভিন্ন চায়ের-দোকানে, পাড়ার আড্ডায় গত কয়েকদিন ধরে প্রধান আলোচনা বিষয় হয়ে রয়েছে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে ইডির তদন্ত। আর হবে নাই বা কেন, এই ভগবানপুরেরই নিহত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানের বিরুদ্ধে ছিল লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে শিক্ষকের চাকরি করে দেওয়ার অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি, নান্টুর সঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থের সরাসরি যোগ ছিল। এমনকী, পার্থের পারিবারিক অনুষ্ঠানে নান্টু গাড়ি গাড়ি মাছও পাঠিয়েছিলেন একধিকবার। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় জনরোষে নান্টু খুন হয়। তবে মারা যাওয়ার আগেই সে এলাকায় বানিয়েছিল প্রাসাদোপম পাঁচতলা বিএড কলেজ।
ফলে এমন নিহত নেতার এলাকায় আরও কোনও ব্যক্তি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকতে পরে অনুমান করছেন এলাকাবাসী। আর সেই কারণেই তাঁরা আশঙ্কা করছেন শীঘ্রই হয়তো এলাকায় ইডি তদন্তে আসতে পারে। স্থানীয় সূত্রের খবর, পার্থের গ্রেফতার পরে গত সপ্তাহে পটাশপুরে কেলেঘাই নদীর বাঁধ মেরামতির কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিল ভগবানপুরের বিডিও। ভগবানপুরের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় বিডিও-র নীলবাতি লাগানো গাড়ি দেখে আমজনতা ভাবে, ইডি এসেছে। তারা স্থানীয় ইলাশপুর বাজারে নান্টুর বিএড কলেজের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। ‘চোর’ ধরার দাবিও করা হয় সেই স্লোগান। পরে অবশ্য স্থানীয়েরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারে। জানতে পারে যে, ইডি আধিকারিক নয়, ওই গাড়ি আদতে ব্লক প্রশাসনের।