ফের হাতির হানায় মৃত্যু হল এক যুবকের। সোমবার রাতে বিনপুরের ডোমশোল গ্রামের ঘটনা। মৃতের নাম কাশীনাথ পাত্র (৩৫)।
স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রের খবর, দিন তিনেক আগে বাঁকুড়ার দিক থেকে এলাকায় তিনটি হাতি ঢুকেছিল। সোমবার হাতিগুলি ডোমশোলের অদূরে সমরভুলার জঙ্গলে ছিল। হাতির উপদ্রবের আশঙ্কায় সোমবার রাতে জমির ধান তুলতে গিয়েছিলেন কাশীনাথবাবু। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে ধান জমিতে হাতির পদপিষ্ট কাশীনাথবাবুর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। মৃতদেহের চারপাশে হাতির পায়ের একাধিক ছাপ ছিল।
এই নিয়ে গত পাঁচদিনে পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলায় বুনো হাতির হামলায় ৬ জনের মৃত্যু হল। হাতির হামলায় মৃত্যুর খতিয়ান বেড়ে চলায় রীতিমতো অশনি সঙ্কেত দেখছে বন দফতর। শিলদার ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার সমীর বসু বলেন, “গত শুক্রবার রাতে একটি পূর্ণবয়স্ক ও দু’টি মধ্য বয়সী হাতি বাঁকুড়ার ফুলকুসমার দিক থেকে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের শিলদা রেঞ্জ এলাকায় ঢুকেছিল। অনুমান, ওই হাতিগুলির কোনও একটি হাতির হামলায় কাশীনাথবাবু মৃত্যু হয়ে হয়েছে।” ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, “মৃতের পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”
বন দফতর সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে দলমার পালের ওই তিনটি দলছুট হাতি রূপনারায়ণ বনবিভাগের রামগড় বিটের জঙ্গলে চলে আসে। গত বৃহস্পতিবার সকালে ও সন্ধ্যায় ওই দলের একটি হাতির হানায় পশ্চিম মেদিনীপুরের রামগড়ে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। বনকর্মী ও হুলাপার্টির তাড়া খেয়ে ওই তিনটি হাতি বাঁকুড়ার দিকে চলে যায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাতের মধ্যে বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ও রাইপুর এলাকায় হাতির হামলায় আরও তিন জনের মৃত্যু হয়। বাঁকুড়ার দিক থেকে তাড়া খেয়ে তিনটি হাতি ফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ঢুকে পড়ে। সোমবার রাতে ডোমশোলে কাশীনাথবাবু হাতির হামলায় প্রাণ হারান। বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার তিনটি হাতি কংসাবতী পেরিয়ে লালগড়ের দিকে গিয়েছে। একই হাতি পর পর মানুষ মারছে কি না সেটা খতিয়ে দেখার জন্য গত পাঁচদিনে দুই জেলায় মৃত্যুর ঘটনাস্থল এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হাতির পায়ের ছাপ বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। যদি দেখা যায়, একটি হাতি পর পর মানুষ খুন করছে, তাহলে হাতিটিকে ‘খুনি’ বা রোগড ঘোষণা করা হয়।
প্রাথমিকভাবে বনকর্মীরা মনে করছেন, দলমার পালের দলছুট তিনটি হাতির দলের একটি হাতি মানুষ মারছে। পথচারীদের আক্রমণ করার পরে যেভাবে পিষে ও ফালা ফালা করে খুন করছে হাতিটি, তাতে একাংশ বনকর্মীর আশঙ্কা, হাতিটি ‘খুনি’ হয়ে গিয়েছে। শীর্ষ বনকর্তারা অবশ্য এখনই হাতিটিকে খুনি বলতে নারাজ। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে হাতির পায়ের ছাপ সংগ্রহ করা হয়েছে। বাঁকুড়ায় সংগৃহীত হাতির পায়ের ছাপের সঙ্গে এখানে পাওয়া হাতির পায়ের ছাপ মিলিয়ে দেখা হবে। তার আগে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy