Advertisement
E-Paper

রোদে ফিকে ‘সবুজ সাথী’

পড়ুয়াদের যাতে স্কুলে যেতে কষ্ট না হয়, সে জন্য তাদের সাইকেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে বাজেট অধিবেশনে ওই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজকুমার গিরি

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০২:০২
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

রোদ-জলে পড়ে থেকে জং ধরছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘সবুজ-সাথী’র সাইকেলে!

পড়ুয়াদের যাতে স্কুলে যেতে কষ্ট না হয়, সে জন্য তাদের সাইকেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে বাজেট অধিবেশনে ওই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সম্প্রতি জেলার ভগবানপুর-২ নম্বর ব্লকে দেখা গেল, খোলা আকাশের নীচে পড়ে ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের কয়েকশো সাইকেল।

ওই ব্লকের বাসুদেববেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শক্তিয়া অঞ্চলে কিসান মান্ডিতে পড়ে রয়েছে কয়েকশো সাইকেল। রোদ, জল, বৃষ্টিতে অধিকাংশ সাইকেলের রং চটে গিয়েছে। ধরেছে জং। কয়েকটি সাইকেলের টায়ার এবং টিউব খসে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় মাস তিনেক সাইকেলগুলি সেখানে পড়ে রয়েছে। সেগুলির গায়ে এমনভাবে আগাছা জমেছে, যে তা আবর্জনার স্তূপ বলেও মনে হতে পারে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাইকেল এভাবে পড়ে নষ্ট হলেও অনেক ছাত্রছাত্রীই ওই প্রকল্পে সাইকেল পায়নি। শক্তিয়া অঞ্চলের এক বাসিন্দা তপন জানা বলেন, ‘‘আমার বড় মেয়ে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। সে সাইকেল পেয়েছিল। ছোট মেয়ে ক্লাস নাইনে পড়ছে। কিন্তু এখনও সাইকেল পায়নি।’’

স্থানীয় দক্ষিণ পাথরবেড়িয়া বুথ কমিটির সদস্য আস্তিক্য দলু‌ই এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘অন্তত তিন মাস ধরে ওই সাইকেলগুলি ওভাবে পড়ে রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোট চলে আসায় বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সাইকেলগুলির যা অবস্থা, তাতে ওগুলি আর ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া যাবে না। যাঁরা সাইকেল তৈরির অর্ডার নিয়েছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।’’

সিপিএমের মুগবেড়িয়া-১ নম্বরের এরিয়া কমিটির সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের অভিযোগ, ‘‘বেশ কয়েক মাস ধরে সাইকেলগুলি ওভাবে পড়ে রয়েছে। প্রশাসনিক অবহেলায় ওই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় বহু স্কুল এখনও সাইকেল পায়নি। সেদিকে নজর না দিয়ে এই ভাবে পড়ে পড়ে সাইকেলগুলি নষ্ট করা হচ্ছে।’’

যদিও মুগবেড়িয়া-১ এর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অশ্বিনীকুমার খাটুয়ার কথায়, ‘‘এই বাড়তি সাইকেলের অধিকাংশই অন্য ব্লকের। আমাদের ব্লকে প্রথম দু’দফায় বেশ কিছু সংখ্যক সাইকেলের অভাব পড়ে। সেই সময় অন্য ব্লক থেকে বাড়তি সাইকেল আনা হয়। কিন্তু পরে এখানে প্রয়োজনীয় সাইকেল নতুন দফায় চলে আসে। ফলে বাড়তি সাইকেলগুলি পড়ে রয়েছে।’’

কিন্তু স্থানীয়দের প্রশ্ন, ‘‘সাইকেলগুলি খোলা আকাশের নীচে রাখা হচ্ছে কেন? এতে তো সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে!’’ এ প্রশ্নের উত্তরে অশ্বিনীবাবুর জবাব, ‘‘ব্লকে রাখার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে কিসান মান্ডিতে রাখা হয়েছে। তাতেও স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না।’’

সাইকেল প্রসঙ্গে ভগবানপুর-২ এর বিডিও বিশ্বজিৎ মজুমদার বলেন, ‘‘কিসাণ মান্ডিতে রাখা সাইকেলগুলি এগরা-১ এবং এগরা-২ থেকে পাঠানো হয়েছিল। ওদের এলাকায় ওগুলি বাড়তি হয়েছিল। খারাপ ছিল বলে সারিয়ে আমাদের এখানে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সাইকেলগুলির অবস্থা খুবই বাজে হওয়ায় সেগুলি আর দেওয়া হয়নি। ওগুলি সারানোর জন্য রাখা হয়েছে।’’ গত শুক্রবার ২০১৭ শিক্ষাবর্ষের বেশ কিছু স্কুলে ৭৯৫টি ভাল সাইকেল বিলি করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত শুক্রবার ব্লকের উদ্যোগে বেশ কিছু সাইকেল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাতে ইচ্ছাবাড়ী হাইস্কুল, বজরপুর রামকৃষ্ণ হাইস্কুল, চম্পাইনগর এস সি হাইস্কুল, মানিকজোড় কে কে হাইস্কুলে কিছু ছাত্রছাত্রীকে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সাইকেলের মধ্যেও অনেকগুলির অবস্থা বেহাল বলে অভিযোগ উঠেছে।

State Government Sabooj Sathi Mamata Banerjee সবুজ সাথী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy