হেলমেট ছাড়াই বাইকে সওয়ার। ঝাড়গ্রামের পাঁচমাথা মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
চালকের মাথায় হেলমেট নেই, বাইক চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলছেন চালক— আইনের প্যাঁচে পড়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেই অভিযুক্ত না কি ফোন করছেন তাঁর চেনা ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তিকে। পাল্টা ফোন আসায় ‘প্যাঁচে’ পড়ে অভিযুক্তকে অনেকক্ষেত্রেই ছেড়ে দিতে বাধ্যও হচ্ছে পুলিশ।
দুর্ঘটনায় রাশ টানতে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচির উপর জোর দেওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তির ফোন পেয়ে আইনভঙ্গকারীদের ধরেও ছেড়ে দেওয়ায় মার খাচ্ছে সেই কর্মসূচিই। এ বার তাই ঝাড়গ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গুলিতে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে আইনভঙ্গকারীদের গাড়ির নম্বর শনাক্ত করে অভিযুক্তের বাড়ির ঠিকানায় জরিমানার কাগজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা ট্রাফিক পুলিশ।
অরণ্যশহরের অন্যত্র তো বটেই। ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র ব্যস্ততম পাঁচ মাথা মোড় এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের সামনেই হেলমেট ছাড়া মোটর বাইক নিয়ে যাতায়াত করছেন একাংশ শহরবাসী। এ ভাবে প্রতিদিন ঝাড়গ্রাম শহরে ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুলিশকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিভিক ভলান্টিয়ারের দাবি, সম্প্রতি এক রাজনৈতিক কর্মীকে চিনতে না পেরে তিনি বাইক থামিয়েছিলেন। মাথায় হেলমেট ছিল না তাঁর। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ কর্মী তাঁকে ছেড়ে দিলেন। কারণ ওই কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ায় জন্য একটি রাজনৈতিক দলের যুব নেতা ফোন করেন। শুধু তাই নয়, কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ কর্মীদের অপদস্তও করছেন আইনভঙ্গকারীরা। কয়েকদিন আগে ট্রাফিক আইন ভাঙার জন্য এক ব্যক্তিকে ধরা হলে তিনি কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীর গায়ে হাত দেন। কিন্তু ওই মুহূর্তের পরের অংশ ভিডিয়ো করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেওয়া হয়।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত হেলমেট না পরার জন্য ৪২৩ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। ফোনে কথা বলার সময় বাইক চালানোর জন্য গত ছ’মাসে ১২০ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার রসিদ পাওয়ার পর আইনভঙ্গকারীকে ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে অথবা অনলাইনে জরিমানার টাকা জমা দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা জমা না দিলে আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ বার ভিডিয়োগ্রাফি করে আইনভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করে জরিমানা করা হবে বলে পুলিশ
সূত্রে খবর।
ঝাড়গ্রামের জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সেক্টর অফিসারেরা থাকবেন। ভিডিও করার ব্যবস্থা করা হবে। সেই মতো অভিযুক্তের ঠিকানায় জরিমানাপত্র পাঠানো হবে।’’ নাগরিকদের সচেতন করার নিরন্তর কর্মসূচি চলবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy