নতুন-পুরনো বিভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছেন শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। যদিও বাস্তবে সেই বার্তায় কতটা কাজ হয়েছে, তা নিয়ে জল্পনা দলের অন্দরেই। গত সোমবারই সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। মানসবাবুকে দিয়েই আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর সবং পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে তৈরি হওয়া কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করাতে চান সমিতির সভাপতি অমল পণ্ডা। দিনকয়েক আগে অমলবাবুও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে খবর, ওই দিন মানসবাবুকে দিয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন করানো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সবংয়ের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি। দলের অন্দরে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছেন অমূল্যবাবু।
তৃণমূলকর্মী জয়দেব জানা খুনের মামলায় নাম জড়ানোর পরে মাস কয়েক সবংয়ে আসেননি মানসবাবু। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁর সবংয়ে আসার কথা। তাই আগে থেকেই ওই দিনের কর্মসূচি সাজাতে শুরু করে দিয়েছেন অমলবাবুরা। সূত্রের খবর, অমলবাবুরা ওই দিন মানসবাবুর হাত দিয়ে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করাতে চান। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমলবাবু বলেন, “২৬ সেপ্টেম্বর মানস ভুঁইয়া সবংয়ে আসবেন। ওই দিন পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। মানসবাবু উদ্বোধন করবেন।” যদিও জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্যবাবুর দাবি, “২৬ সেপ্টেম্বর সবংয়ে কোনও প্রকল্পের উদ্বোধন হবে বলে অন্তত আমি জানি না!”
সমিতির এক সূত্রে খবর, সবংয়ে একটি মিটিং হল, একটি ক্যান্টিন তৈরি হয়েছে। দু’টিই তৈরি হয়েছে সমিতির চত্বরের মধ্যে। মানসবাবু এই প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করতে পারেন। তালিকায় আরও একাধিক প্রকল্প থাকতে পারে। ২৬ সেপ্টেম্বর সবং পঞ্চায়েত সমিতির সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে। বিধায়ক হিসেবে সভায় যোগ দেবেন মানসবাবু।
মানসবাবু দলবদল করার আগেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন তাঁর ভাই বিকাশ ভুঁইয়া, অমলবাবুরা। অমলবাবুর সঙ্গে দলবদল করে সমিতির বেশ কয়েকজন কংগ্রেস সদস্যও। পুরনোদের সঙ্গে নতুনদের সংঘাত এড়াতে ইতিমধ্যে সবংয়ে সমন্বয় বৈঠক করেছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে তাতে যে চিড়ে ভেজেনি, প্রকল্পের উদ্বোধন ঘিরে চাপানউতোর সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে!
সংঘাত ঠিক কোন জায়গায়? দলের এক সূত্রে খবর, অমূল্যবাবুরা চান, নতুনরা দলের পুরনো কর্মীদের মর্যাদা দিক। সম্মান করুক। অমূল্যবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত সবংয়ের এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “ওই দিন প্রকল্পের উদ্বোধন করানো নিয়ে অমূল্যদার মতই নেওয়া হয়নি! সবংয়ে তৃণমূলটা তো উনিই করতেন। ফলে, না- জানিয়ে কর্মসূচি ঠিক হলে ওঁনার ক্ষোভ স্বাভাবিক!” তাঁর মন্তব্য, “মানসবাবু তিনটে প্রকল্পের উদ্বোধন করলে অমূল্যদাকে দিয়েও দু’টো প্রকল্পের উদ্বোধন করানো হোক! অমূল্যদা তো জেলা কর্মাধ্যক্ষ।” পাল্টা অমল- অনুগামী বলে পরিচিত সবংয়ের এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “বিধায়ক আর কর্মাধ্যক্ষ কি এক!”
সবংয়ে এই বিরোধের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy