Advertisement
E-Paper

অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট লক্ষাধিক টাকা

ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আক্যাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য কারও সঙ্গে লেনদেন করতে গ্রাহকদের নিষেধ করা হয়েছে। তার পরও অনেকে প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন। কী ভাবে রণজিৎবাবুর টাকা খোয়া গিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০০:০৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

গত কয়েকদিনে এটিএম কার্ড বা ডেবিট কার্ডের প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেকেই লক্ষাধিক টাকা খুইয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ, পুলিশ এই নিয়ে গ্রাহকদের সতর্ক থাকার কথা বলেছে। তারই মধ্যে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে এক লক্ষের বেশি টাকা খোয়ালেন এক স্বাধীনতা সংগ্রামী।

মহিষাদলের ঘাঘরা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কে রণজিৎ বয়াল নামে ওই ব্যক্তির পেনশন আক্যাউন্ট থেকে প্রায় এক লক্ষ তিরিশ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর দাবি, গত এক মাসে আট দফায় ওই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনওবারই তিনি জানতে পারেননি কারণ ওই সংক্রান্ত কোনও এসএমএস আসেনি।

রণজিৎবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দাদুর ডেবিট কার্ড নিয়ে তাঁর নাতনি বুধবার কলকাতায় গিয়েছিলেন। সেখানে একটি গয়নার দোকানে কেনাকাটা করেন। পরে বিল মেটাতে গিয়ে দেখেন ডেবিট কার্ডে কোনও টাকা নেই। এরপরই ফোনে তিনি দাদুকে সব জানান। রণজিৎবাবু সঙ্গে সঙ্গে মহিষাদলে এসবিআইয়ের শাখায় গিয়ে সব জানান। সেখানে তিনি জানতে পারেন, আট দফায় এক লক্ষ সাতাশ হাজার পাঁচশ পনেরো টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। গত ২ জুলাই থেকে এক মাসের মধ্যে এটা ঘটেছে। তাঁর মোবাইল ফোনে কোনও মেসেজ আসেনি বলে দাবি রণজিৎ বাবুর। মহিষাদল থানায় লিখিত অভিযোগ করার পাশাপাশি জেলার সাইবার দমন শাখাতেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

জেলার সাইবার সেলের এক আধিকারিক জানান, এটিএম কার্ড ‘ক্লোন’ করে কারও আক্যাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিলে গ্রাহক টের পাবেন না। রণজিৎবাবুর ক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আক্যাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য কারও সঙ্গে লেনদেন করতে গ্রাহকদের নিষেধ করা হয়েছে। তার পরও অনেকে প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন। কী ভাবে রণজিৎবাবুর টাকা খোয়া গিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

একই ভাবে প্রতারিত হয়েছেন কাঁথির বাসিন্দা অজিত পাহাড়ি। পুলিশ জানিয়েছে, অজিতবাবু তমলুকের খাদ্য দফতরের কর্মী। গত সোমবার তিনি বাড়িতে ছিলেন না। সেই সময় তাঁর ফেলে যাওয়া মোবাইলে একটা ফোন আসে। সেটি ধরেন অজিতবাবুর ছেলে অভিজিৎ পাহাড়ি। তাঁর অভিযোগ, ফোনের উল্টোদিকে নিজেকে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, ‘অজিতবাবুর এটিএম কার্ডটি ‘লক’ হয়ে গিয়েছে। নতুন করে সেটি চালু করা প্রয়োজন। নতুন কার্ড পেতে হলে পুরনো কার্ডের নম্বর ও পিন নম্বর জানা জরুরি। এর পরই তিনি ওই ব্যক্তিকে বাবার ডেবিট কার্ডের নম্বর, পিন নম্বর বলে দেন। মিনিট দশেকের মধ্যে বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২১ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়।

এ ধরনের ঘটনা রুখতে ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ একটি সাইবার সেল তৈরি করেছে। প্রতারিত ব্যক্তি থানায় অভিযোগ জানানোর পর, সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য নিয়ে ওই সাইবার সেলে অভিযোগ করতে পারবেন। এ ছাড়াও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এই নিয়ে একটি তথ্যচিত্র বানানো হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তার গ্রাহকদের এসএমএস পাঠিয়ে কিংবা ব্যাঙ্কে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সতর্ক করছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘এমন অপরাধ দমনের জন্য ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে নিয়ে পুলিশ বৈঠক করেছে। সংশ্লিষ্ট থানা থেকে গ্রাহকদের সচেতন করতে মাইকে প্রচার চলছে। ব্যাঙ্কগুলিকেও এটিএমগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। কলকাতার লালবাজারেও সাইবার ক্রাইমের জন্য বিশেষ সেল খোলা হয়েছে।’’

কাঁথির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কথায়, ‘‘গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত আমরা এই বিষয়ে সতর্ক করে চলেছি। তাঁরা সচেতন হলে এই ধরনের অপরাধ অনেকটাই রোধ করা যাবে।’’

ATM Fraud Contai Mahishadal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy