Advertisement
E-Paper

সিপিএমের মিছিলে হামলা, অভিযুক্ত তৃণমূল

বিরোধী দলনেতার খাস তালুকে আক্রান্ত সিপিএম। বুধবার তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার পথে সিপিএমের কৃষক সংগঠনের সদস্যদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের পাকুড়সিনি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ওই ঘটনা আহত হয়েছেন সিপিএমের জোনাল সম্পাদক মদন বসু, জেলা কৃষক সভার সদস্য সুধাংশু বেরা-সহ ছ’জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৫ ০০:৫৮
আহতেরা মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

আহতেরা মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

বিরোধী দলনেতার খাস তালুকে আক্রান্ত সিপিএম।
বুধবার তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার পথে সিপিএমের কৃষক সংগঠনের সদস্যদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের পাকুড়সিনি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ওই ঘটনা আহত হয়েছেন সিপিএমের জোনাল সম্পাদক মদন বসু, জেলা কৃষক সভার সদস্য সুধাংশু বেরা-সহ ছ’জন। অন্যদিকে তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, তাদের উপরই হামলা চালিয়েছিল সিপিএমের সদস্যরা। তাতে আহত হয়েছেন পঞ্চায়েতের তৃণমূল এক সদস্যও।
আহতদের প্রথমে বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মদন বসু-সহ পাঁচ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। জানা গিয়েছে ব্লকে ব্লকে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি পালন করছে সিপিএম। মূলত দলের কৃষক সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভাকে সামনে রেখে ধানের নায্য মূল্য, একশো দিনের প্রকল্পের বকেয়া টাকা, ইন্দিরা আবাসে সঠিক তালিকা অনুযায়ী টাকা বিলি-সহ কয়েক দফা দাবি তুলেছে সিপিএম। এ দিন সেই দাবিতেই স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা ছিল পাকুড়সিনি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসেও।

সে জন্যই মিছিল করে পঞ্চায়েত অফিসের দিকে আসছিলেন কৃষক সভার ব্লক স্তরের কর্মী-সমর্থকেরা। নেতৃত্বে ছিলেন জোনাল সম্পাদক মদন বসু, কৃষকসভার জেলা নেতা সুধাংশু বেরা প্রমুখ। অভিযোগ বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ মিছিল যখন পাকুড়সিনি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে ৪০০ মিটার দূরে, তখনই হামলা হয় মিছিলের উপর। ঘটনায় জখম হন মদন বসু, সুধাংশু বেরা, ফণি পাত্র, খাঁদু সিংহ, নিমাই সিংহ, চণ্ডীচরণ বসু-সহ কয়েকজন সিপিএম নেতা ও কর্মী। তাঁদের মাথায়, মুখে ও হাতে আঘাত লেগেছে। অন্য দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত তৃণমূলের ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য গুরুপদ বেরাও ঘটনায় জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর হাতে আঘাত রয়েছে।

জখমদের মধ্যে সিপিএমের ছ’জনকে প্রথমে মকরামপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে বেলদা গ্রামীণে ভর্তি করা হয়। পরে সিপিএমের সুধাংশু বেরা বাদে বাকি পাঁচজনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য এবং নারয়ণগড়ের প্রাক্তন জোনাল সম্পাদক ভাস্কর দত্তের অভিযোগ, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভাবেই স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছিলাম আমরা। সে সময় ঝোপের আড়ালে থেকে সশস্ত্র হামলা চালায় তৃণমূল কর্মীরা। এই হামলা পরিকল্পিত। আমরা থানায় অভিযোগ জানাব।’’

যদিও ঘটনায় পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, এ দিন ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ঊষা সিংহ মেদিনীপুরে জেলা পরিষদে গিয়েছিলেন। সে কথা জানা সত্ত্বেও সিপিএম স্মারকলিপি জমা দেওয়ার নামে গণ্ডগোল বাঁধাতেই যাচ্ছিল। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ বলেন, ‘‘স্মারকলিপি দিতে কেউ লাঠিসোঁটা নিয়ে যায় না। সিপিএমের আসল উদ্দেশ্য ছিল অশান্তি। পথে আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছে। তারপর এলাকার মানুষই প্রতিরোধ করেছে।’’

নারায়ণগড় দীর্ঘদিন সিপিএমের শক্তঘাঁটি বলেই পরিচিত ছিল। এমনকী গত বিধানসভা নির্বাচনেও এখান থেকেই জয়ী হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে পরিস্থিতি বেশ খানিকটা বদলে গিয়েছে। প্রায় সব প়ঞ্চায়েতই গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। কিন্তু অতিসম্প্রতি আবার বামেরা তাদের আন্দোলন জোরদার করছে। খানিকটা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাম সংগঠন। সেই থেকেই যে এই সংঘাত তা মানছেন বাম নেতারাও। জেলা সিপিএমের সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘পিংলাকাণ্ড, কৃষকদের ফসলের দাম না-পাওয়ার মতো সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে বেশ খানিকটা ‘ব্যাকফুটে’ তৃণমূল। ফলে তারা ভয় পাচ্ছে। সেই ভয় থেকেই আজকের আক্রমণ।’’ বৃহস্পতিবার এই ঘটনার প্রতিবাদে জেলার সর্বত্র প্রতিবাদ মিছিল হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Kharagpur CPM Trinamool Narayangar rally road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy