Advertisement
০৩ মে ২০২৪
হস্টেলে হবে শিবির

অবসাদেই কি আত্মঘাতী, শুরু জবাব খোঁজা

মেধাবী ছাত্রীর আত্মহত্যায় ছন্দ হারিয়েছে মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হস্টেল। চারপাশ থমথমে। আবাসিক ছাত্রীদের মন ভার। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউই বেরোচ্ছেন না। প্রথম বর্ষের ছাত্রী রচনা দাসের মৃত্যুটা কেউই মেনে নিতে পারছেন না।

থমথমে: সুনসান মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হস্টেল। নিজস্ব চিত্র

থমথমে: সুনসান মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হস্টেল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০১:৩২
Share: Save:

মেধাবী ছাত্রীর আত্মহত্যায় ছন্দ হারিয়েছে মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হস্টেল। চারপাশ থমথমে। আবাসিক ছাত্রীদের মন ভার। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউই বেরোচ্ছেন না। প্রথম বর্ষের ছাত্রী রচনা দাসের মৃত্যুটা কেউই মেনে নিতে পারছেন না। মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলছিলেন, “এই মন খারাপটা স্বাভাবিক। ঘটনার পরেই হস্টেলে গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। মানসিক জোর বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। আবার সকলের সঙ্গে কথা বলব।”

হস্টেলে সচেতনতা শিবির করার কথাও ভাবছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। সেখানে অবসাদ কাটানোর উপায় বাতলানো হবে ছাত্রীদের। জানানো হবে, অবসাদের প্রাথমিক লক্ষ্মণগুলো কী কী। কলেজের এক শিক্ষকের কথায়, “মনোস্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানও বলছিলেন, “দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস বাড়ায় ক্ষতি হচ্ছে মনোস্বাস্থ্যের। এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো খুব জরুরি।’’

শনিবার সকালে হস্টেলের ঘরেই উদ্ধার হয়েছিল রচনার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির কিশোরনগরের বাসিন্দা রচনা মেদিনীপুর কলেজের রসায়ন বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে বেশ ভাল ফল করেছিলেন তিনি। তবে শুক্রবার কলেজের প্রথম সেমেস্টারের ফলপ্রকাশের পরে দেখা যায়, প্রত্যাশিত নম্বর পাননি রচনা। সেই অবসাদেই তিনি আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছে পুলিশের একাংশ। যদিও পরিজন থেকে রচনার বন্ধুবান্ধব, অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয় কেন একটা সেমেস্টারের ফলের নিরিখে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন এই ছাত্রী। মেদিনীপুর কলেজের এক শিক্ষকও মানছেন, “একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত সাধারণত কেউ নেয় না। ওই ছাত্রীর মনের মধ্যে হয়তো এমন কোনও যন্ত্রণা ছিল যা কেউ বুঝতে পারেনি। এতটুকু মেয়ে কেন আত্মহত্যা করল, তা তলিয়ে দেখা উচিত।’’

মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হস্টেলে প্রায় ১৮০ জন থাকেন। ঘটনার পরে অনেকে হস্টেলে ছেড়েছেন। রচনা যে ঘরে থাকতেন, তার অন্য তিনজন আবাসিককে পরিজনেদের ডেকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরে কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্রবাবু হস্টেলে এসে আবাসিক ছাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, জীবনে একটা পরীক্ষাই সব নয়। সাফল্য যেমন আসে, তেমন কখনও কখনও ব্যর্থতাও আসতে পারে। অধ্যক্ষের কথায়, “ছাত্রীদের বলেছি, ব্যর্থতা এলে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। সেখান থেকেই সাফল্যের পথ খুঁজতে হবে। একটা পরীক্ষা জীবনের সব কিছু নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE