মেদিনীপুর কলেজে কর্মশালা। নিজস্ব চিত্র
মাস কয়েক আগের ঘটনা। ঝড়বৃষ্টির দাপটে সে দিন লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল জেলার বেশ কিছু এলাকা। দুর্যোগের দিনে হোয়াটস অ্যাপে এক ভিডিও পেয়েছিলেন জেলার এক প্রশাসনিক আধিকারিক। ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছিল, ঝড়ে এক বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাচ্ছে। এক পরিচিত এই ভিডিও পাঠিয়ে দাবি করেছিলেন, ছবিটি খড়্গপুরের। অবাক হয়েছিলেন ওই প্রশাসনিক আধিকারিক। জেলায় বড় ঘটনা ঘটে গেল অথচ তিনি জানেন না! পরে অবশ্য খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানতে পেরেছিলেন, ওই ছবি খড়্গপুরের নয়। ছবিটি ভিন্ রাজ্যের। অনেক পুরনোও।
ভুল খবর ‘ফেক নিউজ’ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করতে পুলিশের উদ্যোগে বুধবার এক শিবির হল মেদিনীপুর কলেজে। ছিলেন জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার দেবশ্রী সান্যাল। ডেপুটি পুলিশ সুপার বলছিলেন, ‘‘অনেকে সত্য-মিথ্যা না জেনেই ‘ফেক নিউজ’ চালাচালি করছেন। এর ফলে, নানা সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। তাই এই শিবির।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের জানানো হয়েছে, কোনও ছবি, ভিডিও পেলে তার সত্য-মিথ্যা আগে যাচাই করা উচিত। তারপরই অন্যকে পাঠানো উচিত। তার আগে নয়। ভুয়ো খবর ছড়িয়ে অন্যকে অযথা বিভ্রান্ত করা ঠিক নয়।’’
বস্তুত, দেশ জুড়ে বেড়ে চলা ‘ফেক নিউজ’-এর দাপটে হিংসা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা গত কয়েক বছরের মধ্যে বারবার উঠে এসেছে খবরের শিরোনামে। এক সংস্থার সহায়তায় বুধবারের শিবিরটি হয়। ওই সংস্থার লোকজনেরা ছাত্রছাত্রীদের বোঝান, কেন ‘ফেক নিউজ’-এর ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে বিপদ ঠিক কোথায় রয়েছে। শিবিরের বার্তা যেন ছিল, আনন্দ ছড়ান, গুজব নয়। অর্থাৎ, সত্য তথ্য চালাচালি করুন। কিন্তু মিথ্যা তথ্য নয়। সংস্থার তরফে রবি গুড়িয়া বলছিলেন, ‘‘এখন বেশির ভাগ ‘ইনফরমেশন’ই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আসে। ফলে, এ ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া জরুরি।’’
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘ফেক নিউজ যেমন হাসির খোরাক হতে পারে। অন্য দিকে, তেমন মারাত্মক বিদ্বেষের প্ররোচনা দিয়ে সামাজিক স্থিতিও নড়িয়ে দিতে সক্ষম।’’
শিবির শেষে এক পুলিশ আধিকারিকের কাছে এক ছাত্রের সরল প্রশ্ন ছিল, ‘স্মার্টফোনের আগে মিথ্যা খবর রটত না? যত দোষ সোশ্যাল মিডিয়ার?’ ওই পুলিশ আধিকারিককে বলতে শোনা যায়, ‘‘গুজব আগেও রটত। এখনও রটে। আগে গুজব ছড়াতে বহু গুণ বেশি সময় লাগত। এখন খুব কম সময়ে লাগে। এই যা ফারাক।’’ পুলিশের এক আধিকারিক বলছিলেন, ‘‘বিদ্যুতের বেগে গুজব ছড়ায়। কেউ মিথ্যা খবর রটাতে পারে। কোনও উদ্দেশে। সেটা না বিশ্বাস করলেই হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy