‘ক্যাশলেস’ লেনদেনের উপর জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবার বলছেন ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় আস্থার কথা। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলায় এখনও যে বেশির ভাগ গ্রামেই ন্যূনতম একটা ব্যাঙ্কও নেই।
পরিসংখ্যান বলছে, জঙ্গলমহলের এই জেলায় ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েত। তার মধ্যে ৫৫টি পঞ্চায়েত এলাকাতেই ব্যাঙ্ক নেই। অনেক পঞ্চায়েতই বহরে বেশ বড়। তার অধীনে ৪০-৫০টির মতো গ্রাম রয়েছে। এই হিসেবই বলে দিচ্ছে জেলার বহু মানুষের হাতের কাছে নেই ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। অথচ একশো দিনের কাজ থেকে সরকারি বাড়ি তৈরির প্রকল্প, ছাত্রছাত্রীদের ভাতা— সবই এখন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। এতদিন যাঁরা অ্যাকাউন্ট খোলেননি, তাঁরাও অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইছেন। অথচ, গ্রামীণ এলাকায় সেই পরিকাঠামোই গড়ে তুলতে পারেনি সরকার। ফলে ভোগান্তি বাড়ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার শক্তিকুমার পড়িয়া বলেন, “চেষ্টা চলছে সব গ্রাম পঞ্চায়েতেই ব্যাঙ্কের শাখা খোলার। নতুন বছরের শুরুতে দু’টি নতুন শাখা খোলা হবে।” প্রশাসন সূত্রে খবর, বেশি গ্রাহক আর মুনাফার কথা মাথায় রেখেই ব্যাঙ্কগুলি শহর ও আশপাশের এলাকায় শাখা খুলতে বেশি আগ্রহী। তাই প্রত্যন্ত গ্রামগুলি বঞ্চিতই থেকে যায়। যেমন, শালবনি ব্লকের কাশীজোড়া পঞ্চায়েতে কোনও ব্যাঙ্ক নেই। কাছাকাছি ব্যাঙ্ক বলতে গোদাপিয়াশাল বা সৈয়দপুর। স্থানীয় বাসিন্দা পরিষ্কার মাহাতো বলছিলেন, “৭-৮ কিলোমিটার দূরে ব্যাঙ্ক থাকায় সময় নষ্ট হয়, কাজেরও ক্ষতি হয়।” লক্ষ্মীপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাঙ্ক থাকলেও বেশ কিছু গ্রামের মানুষকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। বামুনিয়ার বাসিন্দা শ্রীকান্ত পান বলেন, “কাছাকাছি ব্যাঙ্ক না থাকায় কাজের ক্ষতি করেই যেতে হয়।” গ্রামীণ এলাকায় এটিএমও নেই।
জানা গিয়েছে, এখন আর গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে নয়, জনসংখ্যার নিরিখে ব্যাঙ্কের শাখা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার শক্তিবাবু বলেন, “প্রথমে ৫ হাজার জনসংখ্যা পিছু একটি করে ব্যাঙ্কের শাখা খোলার চেষ্টা করব। ধীরে ধীরে তা ২ হাজারে নামিয়ে আনা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy