কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে কিসান মান্ডি। তবে বাজার বসে পুরনো এলাকায়। কোথাও রাস্তার ধারে, কোথাও বাসস্ট্যান্ডের জমি দখল করে।
ক্ষীরপাই কিসান মান্ডিতে বাজার বসাতে মাঠে নেমেছেন বিডিও। যেখানে যেখানে আনাজ, মাছ নিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা, সেখানেই গিয়ে হাজির হচ্ছেন ক্ষীরপাইয়ের বিডিও অভিষেক মিশ্র। কখনও যাচ্ছেন পাইকারদের কাছেও। নিজের কাজ সামলে ব্লকের বাজারে বাজারে ঘুরে বোঝানোর চেষ্টা করছেন কিসান মান্ডির গুরুত্ব। আর্জি জানাচ্ছেন, সরকারি জমি দখল করে নয় বরং সরকারি সুযোগ-সবিধায় গড়ে ওঠা কিসান মান্ডিতে ব্যবসা করুন ব্যবসায়ীরা। পরবর্তী সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। নিখরচায় বসার ছাউনি, পানীয় জল, বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক থেকে প্রয়োজনে ঋণ পেতেও সাহায্য করার কথা বলছেন অভিষেকবাবু।
আর পাঁচটা কিসান মন্ডির মতো ক্ষীরপাই কিসান মান্ডি উদ্বোধনের পরও কিছুদিন আনাজ নিয়ে দু’চারজন ব্যবসায়ী বসেছিলেন। তারপর ক্রেতা-বিক্রেতা কোনও পক্ষই আর সে দিকে পা বাড়াননি। অভিষেক মিশ্র বলেন, “মান্ডিতে মানুষের যাতায়াত বাড়াতে হবে। এ জন্য সকাল-সন্ধ্যায় আনাজ বাজার, মাছ ও মাংস দোকান চালু করতেই হবে। আর ফিরে তাকাতে হবে না।”
বিডিও-র পাশে দাঁড়িয়েছেন ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান। আছেন ক্ষীরপাইয়ের পুরপ্রধান দুর্গাশঙ্কর পান ও অন্য কাউন্সিলররা। দুর্গাশঙ্করবাবুর কথায় “অভিষেকবাবুর উদ্যোগে একাধিক বৈঠক হয়েছে চাষি, ফঁড়ে, ব্যবসায়ীয়ের নিয়ে। অনেকেই কথা দিয়েছেন দ্রুতই মান্ডিতে গিয়ে বসবেন বলে।”
তবে শুধু প্রতিশ্রুতি নয়। বিডিও ইতিমধ্যেই মান্ডির কাছে একটি বাসস্টপ চালুও করে ফেলেছেন বিডিও। আশা করছেন, ফল মিলবেই।
কৃষকেরা যাতে তাঁদের উৎপাদিত ফসল একই ছাদের তলায় বিক্রি করতে পারেন সেই লক্ষ্য নিয়েই কিসান মান্ডি গড়ার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য সরকার। ন্যায্য মূল্যের বিষয়টিও ছিল চিন্তায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সবং, পিংলা, গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা-২ সহ ১১টি ব্লকেই কিসান মান্ডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। উদ্বোধনও হয়ে গিয়েছে সবক’টি। কিছু কিসান মান্ডিতে সকালের দিকে বাজার বসলেও তেমন ভাবে জমে উঠেনি। স্রেফ ন্যায্য মূল্যে ধান কেনা ছাড়া আর কিছুই হয়নি।
নজরদারির অভাবে সেগুলি আপাতত পরিত্যক্ত। অভিযোগ, ওই চত্বরে চলে অসামাজিক কাযর্কলাপ। সূত্রের খবর, এক একটি কিসান মান্ডি তৈরি করতে প্রায় ছ’সাত কোটি টাকা খরচও হয়েছে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা, সরকারি উদ্যোগের অভাবে সেগুলি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।
যদিও জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, “এত কোটি টাকা খরচ করে মান্ডি গুলি গড়া হয়েছে। চাষিদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সাধারণ মানুষকেও মান্ডিতে আসতে হবে।